সিলেটে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে জেলা প্রশাসক কার্যালয় প্রাঙ্গণে ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে কর্মসূচির সূচনা হয়। পরে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এ ছাড়া সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং বিভিন্ন বাহিনী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুচকাওয়াজ ও দেশাত্মবোধক ডিসপ্লে প্রদর্শন অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, স্বাধীনতার পর নানা প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশ আজ গভীর দেশপ্রেম, জাতীয় ঐক্য ও রাষ্ট্র সংস্কারের চেতনায় এগিয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, সুশাসন, নারীর ক্ষমতায়ন এবং সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার মাধ্যমে স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে দেশ অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকারের সময়োচিত সংস্কার ও সঠিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ফলে দেশের সামষ্টিক ও ব্যষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন প্রজন্মকে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থার প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের মানবসম্পদ গড়ে তুলতে পারলেই বাংলাদেশ বৈশ্বিক অগ্রযাত্রায় একীভূত হতে পারবে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট গণতন্ত্র ও সুশাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রত্যেক ভোটারের নাগরিক দায়িত্ব। ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সৎ, দেশপ্রেমিক ও যোগ্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের আহ্বান জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম মুক্তিযুদ্ধে সিলেটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ায় সিলেট ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের একটি নির্ভরতার স্থান। এ অঞ্চলের মানুষ মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসাসহ সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করেছেন। অনেক তরুণ ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে বিজয় নিয়ে ফিরেছেন, আবার অনেকে দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে রক্ষা করাই আমাদের অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানে রেঞ্জ ডিআইজি মো. মুশফেকুর রহমান, পুলিশ কমিশনার আব্দুল কুদ্দুছ চৌধুরী, পুলিশ সুপার আখতার উল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিশু-কিশোর সংগঠনের সদস্য এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি, জেল বিভাগ, রোভার স্কাউট, স্কাউট, গার্ল গাইড এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ করে।