সিলেটে স্মার্টফোন চুরি দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বেগজনক আকার ধারণ করেছে। মহানগরী ও আশপাশের এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই মোবাইল চুরির অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এসব চোরাই মোবাইলের দুটি বড় আড়তের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ, যা সিলেট মহানগরীর কোতোয়ালী মডেল থানাধীন বন্দরবাজার এলাকায় অবস্থিত।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, বন্দরবাজারের সিটি হার্ট শপিং সেন্টার ও করিম উল্লাহ মার্কেট দীর্ঘদিন ধরে চোরাই মোবাইল কেনাবেচার কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেট মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেল এ তথ্য নিশ্চিত করে।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ বৃহস্পতিবার দক্ষিণ সুরমার মোমিনখলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. সুজ্জাত (২৭) কে আটক করে। তার কাছ থেকে ৩৮টি বৈধ কাগজপত্রবিহীন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। একই দিন ভোরে দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ী জৈনপুর এলাকায় একটি বাসা থেকে মো. আব্দুস শহিদ ও তার ভাতিজা আকরাম আলী (২১) কে আটক করা হয়। অভিযানে তাদের কাছ থেকে ২৬টি মোবাইল ফোন, ২টি পেনড্রাইভ, ৮টি স্ক্রু-ড্রাইভার এবং একটি ডিএসএলআর ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
আটকদের দেওয়া তথ্যে পুলিশ বন্দরবাজারের সিটি হার্ট শপিং সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ‘তোহা টেলিকম’-এ অভিযান চালায়। সেখান থেকে ২০৪টি বৈধ কাগজপত্রবিহীন মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়, যার আনুমানিক বাজারমূল্য ২৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। পাশাপাশি চোরাই মোবাইল বিক্রির নগদ অর্থ হিসেবে প্রায় সাড়ে ৯ হাজার টাকাও জব্দ করা হয়।
একই দিন করিম উল্লাহ মার্কেটের তৃতীয় তলায় অবস্থিত ‘স্মার্টফোন গ্যালারি’ থেকে দোকান কর্মচারী ফারুক আহমদ (৩৪) এর উপস্থিতিতে ১৫৪টি চোরাই মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, আটক আব্দুস শহিদের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগরের বিভিন্ন থানায় খুন, ছিনতাই ও চুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এসএমপির এডিসি (মিডিয়া) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
পুলিশ আরও জানায়, সিলেটে চুরি হওয়া দামী মোবাইল ফোনের একটি অংশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পাচার করা হয়। সেখানে আইএমইআই নম্বর পরিবর্তন করে সেগুলো বিক্রি করা হয়, ফলে মোবাইল উদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার কিছু ফোন পরিবর্তিত অবস্থায় পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
এর আগেও বন্দরবাজারসহ সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল চুরি ও চোরাই মোবাইল বিক্রির সঙ্গে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযান চালানো হয়েছে। ভুক্তভোগীরা হারানো মোবাইল উদ্ধার ও চুরি প্রতিরোধে আরও সমন্বিত ও কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ ধরনের অপরাধ দমনে নিয়মিত নজরদারি ও অভিযান অব্যাহত থাকবে।
