Uk Bangla Live News

রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয় ব্যার্থ হতে দেওয়া যাবেনা: সিলেটে আযম খান

ডেস্ক সংবাদ

বিএনপি কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান বলেছেন, রক্তের সাগরের বিনিময়ে ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই সফলতাকে ব্যার্থ হতে দেওয়া যাবেনা।
আন্তর্জাতিক গনতন্ত্র দিবিস উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে বিএনপির উদ্যোগে সিলেট আলিয়া মাদরাসা মাঠে আয়োজিত বিভাগীয় র‌্যালিপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমেদ আযম খান এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরো বলেছেন, বিগত ১৫ বছরে বিএনপির ১০ হাজার নেতাকর্মীকে গুম খুন এবং অত্যাচার করেছে আওয়ামী লীগ। এরপর ও তারেক রহমানের নির্দেশে রাজপথ ছাড়েনি বিএনপি। ১৫টি বছর মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। ভোট দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ অধীর আগ্রহ নিয়ে বসে আছেন। তিনি সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে দ্রুত নির্বাচনের রোড ম্যাপ ঘোষনা করার আহবান জানান
সিলেট বিভাগ বিএনপির সমাবেশ ও র‌্যালী আয়োজক কমিটির সমম্বয়কের বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জিকে গউছ বলেন, বিগত ১৭ বছর কোটি কোটি ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ দেয়া হয়নি। ভুয়া ভোটের জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করা হয়েছে। দেশের কোটি কোটি ভোটার অর্থবহ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেনি। দেশের কয়েক প্রজন্ম গণতান্ত্রিক অধিকারের চর্চা ও প্রয়োগ ছাড়াই একটি ভীতিকর ও কর্তৃত্ববাদী পরিবেশে বেড়ে উঠেছে। অপশাসনে সংকুচিত স্বাধীনতা ও সৃজনশীলতা তথা মানবিক ও মানসিক বিকাশ ও প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিনযাপন করতে হয়েছে। তরুণদের উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতকে নস্যাৎ করা হয়েছে। সবল ও শক্তিশালী গণতন্ত্র গড়ে তোলার জন্য আমাদের এখনও অনেক দুর এগোতে হবে। কারণ এখনও বিশ্বের অধিকাংশ দেশে গণতন্ত্রের দুর্বলতা বিদ্যমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা তাহসিনা রূশদী লুনা বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমাদের এমন একটি শাসন ব্যবস্থায় উপনীত হতে হবে যেখানে জনগণ সরাসরি শাসনব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করতে পারে। জনগণের মতামতই হয় সেই সরকারের পরিচালনার ভিত্তি। কেবলমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় শান্তি, স্থিতিশীলতা, উন্নয়ন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। আমরা দুঃসময় কাটিয়ে উঠে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার সার্বিক প্রচেষ্টায় আমাদেরকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। তিনি অবিলম্বে সিলেটের মাটি ও মানুষের নেতা জননেতা এম ইলিয়াস আলীসহ সকল গুমকৃত নেতাকর্মীদের ফিরে দেওয়ার আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের নাগরিক স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও মানবিক সাম্য হরণ করে এক সর্বনাশা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম ছিল। নানা কালাকানুনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ, ভিন্নমতের কারণে অনেকেই গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার করা হয়েছিল। বাংলাদেশের কিংবদন্তিতুল্য গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আপোষহীন যোদ্ধা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল। গণতন্ত্রের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর নামিয়ে আনা হয়েছিল মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়ার বর্বরোচিত অত্যাচার। দেশবাসী এক ভয়াবহ দুর্দিন অতিক্রম করে ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক রক্তস্নাত আন্দোলনের বিজয়ের মধ্য দিয়ে এখন কিছুটা মুক্তির নি:শ্বাস নিতে পারছে।
সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিফতাহ সিদ্দিকী বলেন, গণতন্ত্র সর্বজনীন যা, কোন দেশ বা অঞ্চলের অন্তর্গত নয়। গণতান্ত্রিক সমাজে ব্যক্তি মানুষের মর্যাদা সমুন্নত থাকে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় মানুষকে কৃতদাসে পরিণত করা যায় না। একমাত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র-সমাজেই কেবলমাত্র মানুষের অধিকার নিশ্চিত হয়। জনগণের স্বাধীন ইচ্ছার ওপর ভিত্তি করে তাদের নিজস্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক নির্ধারণ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যবস্থাসহ জীবনের সকল দিকগুলোর স্বত:স্ফূর্ত পূর্ণ প্রকাশ ঘটে। সারাবিশ্বে বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতি মানুষের আগ্রহকে ভূলুণ্ঠিত করে বিভিন্ন দেশে এখনও একদলীয় দুঃশাসনের কালো থাবা বিরাজমান। তিনি আজ পর্যন্ত দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে যারা জীবন দিয়েছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। আত্মদানকারী শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের সমবেদনা।


বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এবং জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরীর যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কলিম উদ্দিন মিলন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আক্তার, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, মিজানুর রহমান চৌধুরী মিজান, হাজী মুজিব, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুরুল ইসলাম, সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন, মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়জুল করিম ময়ুর, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ সাফেক মাহবুব।
বিকাল ৩টা থেকে শুরু হয় সমাবেশের মূল কার্যক্রম। তবে দুপুর থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন সিলেট বিভাগের নেতাকর্মীরা। বেলা ২টার দিকে কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায় আলিয়া মাদরাসা মাঠ।
সমাবেশে শেষে আলিয়া মাদারাসা মাঠ থেকে বিশাল র‌্যালি শুরু হয়ে মহানগরের রেজিস্ট্রি মাঠে গিয়ে শেষ হয়।

Print
Email

সম্পর্কিত খবর

অর্ধমাস ধরে বন্ধ তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানি
চালক ছাড়াই চলবে অটোমামা
সিলেটে বেড়েছে এইডসে মৃত্যুর সংখ্যা
নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে প্রয়োজন আইনের কঠিন প্রয়োগ: মুকতাবিস উন নূর
বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে: ড. মোহাম্মদ শহিদুল হক
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ শীর্ষক কথিকা
জনগনকে তথ্য অধিকার আইনের ধারনা দিতে হবে: সিলেটে তথ্য সচিব
ব্যবস্থাপকের যোগসাজসে বিক্রি হচ্ছে চা বাগানের জমি
স্বামী হত্যার দায়ে সিলেটে স্ত্রীসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ
চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির ২য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশ অনুষ্ঠিত