সিলেটের গোলাপগঞ্জে মব সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন প্রবীণ সাংবাদিক আব্দুল আহাদ। দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত এই গণমাধ্যমকর্মী সম্প্রতি একটি সহিংস ঘটনার শিকার হন, যেখানে তাকে “ডেভিল” বলে অপমানিত করে একটি দল জনরোষ সৃষ্টি করে এবং তার পেছনে ধাওয়া করে।
ঘটনার সময় প্রাণ বাঁচাতে তিনি বাধ্য হন দীর্ঘ রাস্তা দৌড়ে পালাতে। একপর্যায়ে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে তিনি একটি খাল সাঁতরে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যদি এই সমাজেই সাংবাদিকরা এভাবে লাঞ্ছিত হন, তাহলে তারা নিরাপত্তা পাবে কোথায়?”
ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর প্রশ্ন তুলেছেন—“একজন সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে এমন ঘটনা কার স্বার্থে ঘটানো হলো?” তিনি বলেন, “আহাদ একজন পেশাদার সাংবাদিক, যিনি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই পেশাগত সম্পর্ক রক্ষা করে এসেছেন। এটি কোনো অপরাধ নয়। তাহলে তিনি কীভাবে হঠাৎ ‘ডেভিল’ হয়ে গেলেন?”
জানা গেছে, ‘কাওসার’ নামের এক ব্যক্তি এই ঘটনার মূল উসকানিদাতা। তিনি আহাদকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করেন এবং সেই দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। এতে জনমনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি জনতা আহাদের বিরুদ্ধে হিংসাত্মক আচরণ শুরু করে। ভিডিওতে দেখা যায়, আহাদ আতঙ্কে দৌড়ে পালাচ্ছেন এবং পরবর্তীতে একপর্যায়ে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে রক্ষা পান।
বিএমএসএফ দাবি জানিয়েছে, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। তারা প্রশ্ন তুলেছে, “কে এই কাওসার? তাকে এই সাহস কে দিলো?”
ফোরামের পক্ষ থেকে কাওসারকে আইনের আওতায় এনে ঘটনার পেছনে কারা রয়েছে তা খুঁজে বের করার জন্য জোর দাবি জানানো হয়েছে।
সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, একজন সম্মানিত সংবাদকর্মীর এমন হেনস্তার ভিডিও প্রকাশ করে তার সম্মানহানি যারা করেছে, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।