মানবকল্যাণে এক নতুন ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগ—এমনটাই জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যে আয়োজিত এক চ্যারিটি অনুষ্ঠানের অতিথিরা।
গত রবিবার লন্ডনের রমফোর্ডের দ্য সিটি প্যাভিলিয়নে আয়োজিত চ্যারিটি ডিনার পরিণত হয় এক বিশাল সমাবেশে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সিলেটের ওসমানীনগরে ২৫০ শয্যার আধুনিক এনআরবি হাসপাতাল নির্মাণে তহবিল সংগ্রহ।
আন্তর্জাতিক মানের এই হাসপাতাল নির্মাণে প্রবাসীদের এমন উদ্যোগকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন আয়োজকরা। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন যুক্তরাজ্যজুড়ে বসবাসকারী প্রবাসী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, কাউন্সিলর, বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ প্রায় ৮০০ জন। শুধু এই একটি আয়োজনে সংগ্রহ হয় ৫ লাখ ৬৫ হাজার পাউন্ড।
অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ফারহান মাসুদ। শুরুতেই কোরআন তিলাওয়াত করেন মুফতি শেখ সাআদ আহমেদ। এরপর প্রদর্শিত হয় প্রস্তাবিত হাসপাতালের প্রামাণ্যচিত্র।
প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন—উমরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া, ক্যানারি ওয়ার্ফ গ্রুপের সাবেক পরিচালক ডা. জাকির খান, সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মিলন, NHS কনসালটেন্ট ও RFC চেয়ারম্যান ডা. জিয়াউল হক, MAC-এর সিইও সালমান মুজতবা, ব্র্যান্ডিং ডিরেক্টর আরাফ বিন তারেক, প্রজেক্ট ডিরেক্টর শরিফুল ইসলাম সিকদার, সিইও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. আব্দুল্লাহ-আল-হারুন, সলিসিটর আবুল কালাম, এশিয়া কারীর প্রেসিডেন্ট ইয়াওয়ার খান, বিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট রফিক হায়দার, এবং এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ OBE প্রমুখ।
আয়োজকরা জানান, সিলেটের উমরপুরে হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যেই ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমানের পরিবার ৫ একর জমি দান করেছেন। হাসপাতালের স্থাপত্য ও প্রকৌশল নকশাও সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপে ১৫০ জন সমর্থকের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে ২.৫ মিলিয়ন পাউন্ড।
তারা আশাবাদী, ইউরোপ, আমেরিকা ও বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে প্রবাসীদের সহায়তায় এই তহবিল আরও সম্প্রসারিত হবে। বক্তারা বলেন, এনআরবি হাসপাতাল শুধু একটি চিকিৎসাকেন্দ্রই নয়, এটি হয়ে উঠবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মানবিক অবদানের এক স্থায়ী স্মারক—যার সুফল পাবে সিলেটসহ উত্তর-পূর্ব বাংলার প্রায় দেড় কোটিরও বেশি মানুষ।