যুক্তরাজ্যে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে নতুন কঠোর নীতির ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, দক্ষ কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ইংরেজি ভাষায় ‘এ-লেভেল’ (B2) সমতুল্য দক্ষতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই পরিবর্তন ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে।
নতুন নিয়মে কী থাকছে?
-
ভিসা পেতে ইংরেজিতে B2 স্তরের (এ-লেভেল মানের) দক্ষতা লাগবে।
-
নির্ভরশীল স্বামী/স্ত্রী ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও অন্তত A1 স্তরের ইংরেজি জানা বাধ্যতামূলক।
-
স্থায়ীভাবে বসবাস (সেটেলমেন্ট) করতে চাইলে B2 স্তর পর্যন্ত উত্তীর্ণ হতে হবে।
-
B2 স্তরে পৌঁছাতে দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল কোর্স করতে হবে, যার খরচ কয়েক হাজার পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে।
-
এ খরচ ব্যক্তিগতভাবেই বহন করতে হবে; সরকারের পক্ষ থেকে কোনও আর্থিক সহায়তা থাকবে না।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন,
“এই দেশ তাদেরই স্বাগত জানায় যারা ইংরেজি ভাষা শিখে জাতীয় জীবনে অবদান রাখতে প্রস্তুত। ভাষা না জানলে যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগও সীমিত।”
তিনি আরও জানান, যুক্তরাজ্যের নেট মাইগ্রেশন বর্তমানে ৪ লাখ ৩১ হাজার, যেটি কমিয়ে আনার লক্ষ্যেই এই কঠোর নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।
অভিবাসীদের শঙ্কা
ভাষা পরীক্ষায় (SELT) উত্তীর্ণ হতে খরচ হবে বেশ কয়েকশ পাউন্ড। আবার দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে খরচ আরও অনেক বেশি। যেহেতু স্পাউস বা নির্ভরশীলরা ‘অর্থনৈতিকভাবে সক্রিয়’ নন, তাই তারা সরকারের কোনো তহবিল বা অনুদান পাবেন না।
আইনজীবীদের মত
লন্ডনের চ্যান্সেরি সলিসিটর্সের কর্ণধার ব্যারিস্টার মো. ইকবাল হোসেন বলেন,
“এই নিয়ম বাস্তবায়নে সরকারি সহায়তা না থাকলে তা অভিবাসী পরিবারগুলোর জন্য বিশাল আর্থিক বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। এতে করে দক্ষ কর্মীরা পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে আনার আগ্রহ হারাতে পারেন।”
আরও কিছু পরিবর্তন:
-
নিয়োগকর্তাদের ইমিগ্রেশন স্কিলস চার্জ ৩২% বৃদ্ধি।
-
১৮০টি স্বল্পবেতনের পেশাকে দক্ষ ভিসা প্রক্রিয়া থেকে বাদ।
-
বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্নাতকোত্তর পর যুক্তরাজ্যে থাকার মেয়াদ ২ বছর থেকে কমিয়ে ১৮ মাস করা হয়েছে।
এই নতুন নীতিমালা প্রবাসী বাংলাদেশিসহ বিশ্বের লাখো অভিবাসন প্রত্যাশীর জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।