সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রতনকান্দি ইউনিয়নের একডালা গ্রামে ছোট্ট একটি খালের ওপর পাশাপাশি দুটি সেতু নির্মাণের প্রায় আড়াই বছর কেটে গেছে। ৩২ ও ৪৪ মিটার দৈর্ঘ্যের এসব সেতুর জন্য ব্যয় হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকা। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় এখনো কোনো যানবাহনই সেতুদ্বয় ব্যবহার করতে পারছে না। ফলে সেতুর ওপরই স্থানীয়রা ধান, খড় ও গোবরের ঘুঁটে শুকানোর কাজ করছেন।
দুই ইউনিয়নের পঞ্চাশ হাজার মানুষের দুর্ভোগ
খালের ওপর সেতু থাকলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় রতনকান্দি ও শুভগাছা ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। কুড়ালিয়া দিয়ার–একডালা চার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের মধ্যবর্তী অংশ তিন বছর আগে ভেঙে খালে তলিয়ে যায়।
২০২৩ সালে সেতু নির্মাণের পরও ভেঙে যাওয়া ৭০০ মিটার রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় আজও সেখানে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের কৃষিপণ্য হাটে নিতে সমস্যা হচ্ছে, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়, আর অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নেওয়াও হয়ে উঠছে কঠিন।
অতিরিক্ত সময় ও খরচে পণ্য পরিবহন
স্থানীয় কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, রাস্তা না থাকায় সার-বীজ আনা যেমন কষ্টকর, তেমনি নিজের ফসল হাটে তুলতেও বাড়তি সময় ও খরচ লাগছে। সময়মতো কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্যও পাওয়া যাচ্ছে না।
কলেজছাত্র শিহাব বাবু ও সাগর আলীরা জানান, বৃষ্টি বা বন্যার সময় স্কুল-কলেজে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
শতবর্ষী হযরত আলী বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে পাঁচ গ্রামের মানুষ যাতায়াত করে। হাটে যেতে অনেক ঘুরতে হয়। ভোগান্তিতে জীবন কাটছে।”
সেতু ব্যবহারের বদলে শুকানো হয় ধান-খড়
কৃষক ভুট্ট আলী বলেন, “গাড়ি চলে না, মানুষজনও আসে না। তাই আমরা সেতুর ওপর ঘুঁটে, ধান আর খড় শুকাই।”
সংযোগ সড়ক নির্মাণে জমি প্রয়োজন
এলজিইডি সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউর রহমান জানান, ভেঙে যাওয়া সড়কের ৭০০ মিটার এলাকা বর্তমানে খালের মধ্যে পড়ে আছে। এ কারণে ওই অংশে সরকারি রাস্তা নেই।
তিনি বলেন, “রাস্তাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয়রা যদি সম্মিলিতভাবে জমি দিতে রাজি হন, তাহলে রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”