প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের সুনাম আরেকবার আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দৃষ্টিগোচর হলো। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সিলেটের মেধাবী প্রবাসীদের অবদান দীর্ঘদিনের গর্ব। সেই ধারাবাহিকতায় এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনের দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে একসঙ্গে নিয়োগ পেলেন সিলেটি বংশোদ্ভূত দুই ব্রিটিশ-বাংলাদেশি আইনজীবী- আফজাল সামী সৈয়দ-আলী এবং ব্যারিস্টার মুহাম্মদ সাইফ উদ্দীন খালেদ। বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আফজাল সামী সৈয়দ-আলীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের স্পেশাল প্রসিকিউটোরিয়াল অ্যাডভাইজার এবং ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দীন খালেদকে গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর (ইন্টারন্যাশনাল স্পোকসপারসন) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা দুজনই এক বছরের জন্য অবৈতনিক ভিত্তিতে দায়িত্ব পালন করবেন।
সিলেটের জগন্নাথপুর উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের সন্তান আফজাল সামী। আন্তর্জাতিক আইনে তার সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার স্বীকৃতি হিসেবেই তাকে বিশেষ উপদেষ্টা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলএম শেষ করে সিলেট জজ কোর্টে আইনপেশা শুরু করেছিলেন তিনি। পরে বার-এট-ল সম্পন্ন করে ইনার টেম্পলের ব্যারিস্টার হন। লন্ডনের আদালতে ১৫ বছরেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা তার পেশাদারিত্বের উজ্জ্বল প্রমাণ। বর্তমানে তিনি ব্রিটিশ চেম্বারের পিপল মাস্টার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার আমলশীদ গ্রামের সন্তান ব্যারিস্টার সাইফ উদ্দীন খালেদ ব্রিটেনের আইন ও রাজনীতি-দুই ক্ষেত্রেই সমান সফল। লন্ডনের তিনটি খ্যাতিমান বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা অর্জন শেষে তিনি সলিসিটর হিসেবে যোগ্যতা লাভ করেন। ২০২২ সালে কাউন্সিলর, ২০২৩ সালে ডেপুটি স্পিকার এবং বর্তমানে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাচিত স্পিকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
‘কেপিপি ব্যারিস্টার চেম্বার্স’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও হিসেবে তার নেতৃত্ব সিলেটি প্রবাসীদের মাঝে বাড়িয়েছে গর্ব।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সাম্প্রতিক আলোচনার মধ্যেই ট্রাইব্যুনালের শীর্ষ পদে সিলেটের দুই মেধাবী আইনজীবীর এই নিয়োগ বহুজন দেখছেন ইতিবাচক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে।
প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট যে শুধু অর্থনৈতিক নয়, বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রেও বিশ্বকে সমৃদ্ধ করছে—সামী ও খালেদের এই অর্জন তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।