বিশিষ্ট বাংলাদেশি ফটোগ্রাফার, লেখক ও মানবাধিকারকর্মী শহিদুল আলমকে ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে। ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা মিশনের অংশ হিসেবে যাত্রার সময় তিনি ইসরায়েলি সেনাদের হাতে আটক হন। শহিদুল আলমসহ ৯৩ জন সাংবাদিক, চিকিৎসক ও মানবাধিকারকর্মীকে বহনকারী জাহাজ “দ্য কনশেনস”-এ এই হামলা চালানো হয়।
আটকের আগে বুধবার নিজের ফেসবুক পেজে একটি ভিডিওবার্তায় শহিদুল আলম বলেন: “আমি শহিদুল আলম, বাংলাদেশের ফটোগ্রাফার ও লেখক। আপনি যদি এই ভিডিওটি দেখেন, তার মানে আমাদের সমুদ্রে আটকে দেওয়া হয়েছে এবং আমাকে অপহরণ করেছে ইসরায়েল দখলদার বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা শক্তির সক্রিয় সহযোগিতায় গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে এই দেশ। আমি আমার সব সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য।”
আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার দাবি নিয়ে গাজার অবরুদ্ধ জনগণের জন্য রওনা হয়েছিল ফ্রিডম ফ্লোটিলা জাহাজবহর। এই বহরটি ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (FFC) ও থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (TMTG)-এর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয়।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপকূলের কাছে পৌঁছানোর পর ইসরায়েলি সেনারা বহরটির ওপর হামলা চালায় এবং জাহাজসহ আরোহীদের জোরপূর্বক একটি ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলায় শহিদুল আলমসহ সব আরোহীকে আটক করা হয়।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ (পূর্বে টুইটার) দেওয়া বার্তায় জানায়, “আইনি নৌ অবরোধ লঙ্ঘন করে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করা হয়েছে। যাত্রীদের একটি ইসরায়েলি বন্দরে স্থানান্তর করা হয়েছে এবং তারা সবাই সুস্থ ও নিরাপদ আছেন। খুব শিগগিরই তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।”
শহিদুল আলমের আটকের ঘটনায় বাংলাদেশে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এবং সাধারণ মানুষ তাকে অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানা গেছে।
শহিদুল আলম আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে একজন সুপরিচিত ফটোজার্নালিস্ট ও মানবাধিকারকর্মী। এর আগেও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী বিবেকবান মানুষের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তিনি এ মিশনে অংশ নিয়েছিলেন।