সঞ্চয়পত্রের সার্ভার ব্যবহার করে জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের নামে থাকা সঞ্চয়পত্র ভেঙে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রতারণা রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেজবাহ উদ্দিন বলেন, “ঘটনাটি নিয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে গত পরশু বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে একটি জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বসহকারে তদন্ত করছি।”
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ব্যাংকের মতিঝিল অফিস থেকে এক গ্রাহক ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেন। চারদিন পর, গত সোমবার সেই সঞ্চয়পত্র জালিয়াতির মাধ্যমে ভাঙিয়ে ওই টাকা এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়। পরে একই দিন ব্যাংকের শ্যামলী শাখা থেকে পুরো টাকা তুলে নেওয়া হয়।
একই পদ্ধতিতে ওই দিন আরও দুটি সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর চেষ্টা করা হয়—একটি ৩০ লাখ টাকার (ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে) এবং অন্যটি ২০ লাখ টাকার (এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে)। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসায় এসব জালিয়াতি রোধ করা সম্ভব হয়।
চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত দেশে সঞ্চয়পত্রে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৭১ কোটি টাকা। এসব সঞ্চয়পত্র বিক্রি ও ভাঙানো হয় বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক, সঞ্চয় অধিদফতর ও পোস্ট অফিসের প্রায় ১২ হাজার শাখা থেকে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত কেবল বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসেই এমন জালিয়াতির ঘটনা শনাক্ত হয়েছে। অন্য কোনো শাখা বা প্রতিষ্ঠানে অনুরূপ ঘটনা ঘটেছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সঞ্চয়পত্রের সার্ভার পরিচালনা করে অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, চিহ্নিত জালিয়াতির ঘটনাগুলো সার্ভার হ্যাকের মাধ্যমে সংঘটিত হয়েছে কি না, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।