ত্বকের উপর ছোট ছোট দানার মতো গঠন—যা আমরা আঁচিল নামে চিনি—অনেকের শরীরেই দেখা যায়। সাধারণত এটি ক্ষতিকর নয়, তবে চোখে পড়লে বা ব্যথা হলে তা অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেকে মনে করেন, আঁচিল দূর করতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়াই একমাত্র উপায়, কিন্তু কিছু ঘরোয়া কৌশলও বেশ কার্যকর হতে পারে।
মার্কিন স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইন–এর পরামর্শ অনুযায়ী, বিশেষজ্ঞরা ঘরে বসেই আঁচিল দূর করার কিছু সহজ উপায় জানিয়েছেন।
কেন হয় আঁচিল?
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নাহিদ এ. আলির মতে, আঁচিল সাধারণত হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) সংক্রমণের কারণে হয়। ভাইরাসটি তোয়ালে, গামছা বা রেজারের মাধ্যমে সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের মধ্যে এর ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি, তবে বড়রাও আক্রান্ত হতে পারেন। সাধারণত এটি বড় কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি না করলেও অস্বস্তি ও ব্যথা দিতে পারে।
ঘরোয়া উপায়ে আঁচিল দূর করার কার্যকর কৌশল
১. শুকনা মরিচের সস:
শুকনা মরিচ বেটে সামান্য পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। প্রতিদিন দুবার আঁচিলের জায়গায় লাগান। টানা দুই সপ্তাহ ব্যবহারে আঁচিল ছোট হতে শুরু করবে এবং রং ফিকে হয়ে যাবে।
২. গরম পানি:
এক পাত্রে পানি ফুটিয়ে আঁচিলযুক্ত অংশ কিছুক্ষণ গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখুন। ব্যথা অনুভূত হলে উঠিয়ে ঠান্ডা পানি লাগান। দিনে তিনবার দুই সপ্তাহ চালিয়ে যেতে পারেন।
৩. বেইকিং সোডা:
এক কাপ পানিতে আধা চা চামচ বেইকিং সোডা মিশিয়ে তুলার বল ভিজিয়ে নিন। আঁচিলের জায়গায় ১৫ মিনিট রাখুন, এরপর ধুয়ে ফেলুন।
৪. ডিম:
ডিমের সাদা ও কুসুম ভালোভাবে মিশিয়ে আলতোভাবে আঁচিলের ওপর লাগান। দিনে দুবার ব্যবহার করুন এবং দুই সপ্তাহ চালিয়ে যান। এই সময় ওই অংশে সাবান ব্যবহার না করাই ভালো।
৫. পেঁয়াজ:
পেঁয়াজের প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক গুণ আঁচিল দূর করতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ বেটে আঁচিলের জায়গায় লাগিয়ে ব্যান্ডেজ দিয়ে ঢেকে রাখুন। দিনে দুবার ব্যান্ডেজ পরিবর্তন করুন।
৬. ডাক্ট টেপ:
বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটি কার্যকর। আঁচিলের ওপর ৩–৫ দিন টেপ লাগিয়ে রাখুন। নিচের ত্বক নরম হয়ে গেলে এমেরি বোর্ড বা পিউমিস স্টোন দিয়ে হালকা করে ঘষে তুলুন, তারপর আবার টেপ লাগান। এভাবে চালিয়ে গেলে আঁচিল ধীরে ধীরে সেরে যায়।