পশ্চিম নাইজেরিয়ার নাইজার রাজ্যের আগওয়ারা জেলার পাপিরি সম্প্রদায়ের সেন্ট মেরি স্কুলে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ২১৫ জন শিক্ষার্থী ও ১২ জন শিক্ষককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র বন্দুকধারীরা। নাইজেরিয়ার খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন (সিএএন) জানিয়েছে, শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকালে সংঘটিত এই হামলায় একজন নিরাপত্তারক্ষী গুলিবিদ্ধ হন।
কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে দেশটিতে সংঘটিত সবচেয়ে বড় অপহরণের ঘটনা এটি। এর মাত্র দু’দিন আগে, ১৯ নভেম্বর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের আরেকটি স্কুল থেকে ২৫ জন ছাত্রীকে অপহরণ করা হয়।
নাইজার রাজ্য সরকারের সচিব এক বিবৃতিতে জানান, হামলার ব্যাপারে আগেই গোয়েন্দা সতর্কতা পাওয়া সত্ত্বেও স্কুলটি রাজ্য সরকারের অনুমতি ছাড়াই পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছিল। এর ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মীরা মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েন।
স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, অপহৃতদের উদ্ধারে ট্যাকটিকাল ইউনিট ও সামরিক বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। সেন্ট মেরি স্কুলটি একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় যার সঙ্গে প্রাথমিক বিভাগও সংযুক্ত। স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী ক্যাম্পাসে ৫০টিরও বেশি ভবন রয়েছে—শ্রেণিকক্ষ, ডরমিটরি ও প্রশাসনিক ভবনসহ।
ঘটনার পর নিখোঁজ শিশুসন্তানদের খোঁজে অসংখ্য পরিবার পুলিশের কাছে জড়ো হয়েছেন। ৬২ বছর বয়সী স্থানীয় বাসিন্দা দাউদা চেকুলা বলেন, তার ৭ থেকে ১০ বছর বয়সী চার নাতি-নাতনিকে সন্ত্রাসীরা তুলে নিয়ে গেছে।
অপহরণের এই ঘটনায় দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিতব্য জি–২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন নাইজেরিয়ার রাষ্ট্রপতি বোলা টিনুবু। তার পরিবর্তে সম্মেলনে অংশ নেবেন উপ-রাষ্ট্রপতি কাশিম শেট্টিমা।
আন্তর্জাতিক মহলে ধারণা করা হচ্ছে, সাম্প্রতিক এসব অপহরণ কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নাইজেরিয়ার খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওপর হামলার বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার ইঙ্গিত দেওয়ার পর থেকেই স্কুল অপহরণ ও গির্জায় হামলার ঘটনা বেড়েছে। তবে নাইজেরিয়া সরকার এসব দাবিকে অস্বীকার করে বলেছে, সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর আক্রমণে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুসলিম সম্প্রদায় ক্ষতিগ্রস্ত হন।
সূত্র: আল-জাজিরা, এসোসিয়েটেড প্রেস (এপি)