সম্প্রতি প্রকাশিত “গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজ” শীর্ষক এক গবেষণায় দেখা গেছে, বিশ্বব্যাপী কিশোর ও তরুণদের মধ্যে মৃত্যুহার বাড়ছে, যা গবেষকদের মতে একটি ‘উদীয়মান সংকট’।
১৬ হাজার ৫০০ বিজ্ঞানীর যৌথ এ গবেষণা ৩ লাখেরও বেশি উৎসের তথ্য বিশ্লেষণ করে তৈরি হয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়,
-
উত্তর আমেরিকায় তরুণদের মধ্যে মাদক ও অ্যালকোহলের ব্যবহার এবং আত্মহত্যার প্রবণতা মৃত্যুহার বৃদ্ধির মূল কারণ।
-
সাব-সাহারান আফ্রিকায় সংক্রামক রোগ, আঘাত এবং মাতৃমৃত্যু এর জন্য দায়ী।
এছাড়া, হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুখ এবং মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা তরুণদের মধ্যে অসুস্থতার বড় কারণ হয়ে উঠছে।
২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী গড় মৃত্যুহার কমেছে এবং কোভিড-১৯–পরবর্তী আয়ু আবার বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে গড় আয়ু নারীদের ক্ষেত্রে ৭৬.৩ বছর এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৭১.৫ বছর, যা ১৯৫০ সালের তুলনায় ২০ বছরের বেশি।
তবে অঞ্চলভেদে ভিন্নতা রয়ে গেছে—উচ্চ আয়ের দেশে গড় আয়ু যেখানে ৮৩ বছর, সেখানে সাব-সাহারান আফ্রিকায় তা মাত্র ৬২ বছর।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের গবেষক ড. ক্রিস্টোফার ম্যুরে বলেন, তরুণদের মধ্যে বিশেষ করে মেয়েদের মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, উদ্বেগ ও বিষণ্ণতা মৃত্যুহার বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত।
তবে এই মানসিক সংকটের পেছনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইলেকট্রনিক ডিভাইসের প্রভাব নাকি পারিবারিক বা সামাজিক পরিবর্তন দায়ী—তা নিয়ে এখনো বিতর্ক রয়েছে।
নতুন তথ্যে উঠে এসেছে, ৫–১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুহার ১৯৫০ সালের তুলনায় অনেক বেশি ছিল।
১৫–২৯ বছর বয়সী নারীদের মৃত্যুহার পূর্বানুমানের চেয়ে ৬১% বেশি, যার পেছনে রয়েছে মাতৃমৃত্যু, দুর্ঘটনা ও সংক্রামক রোগ।
অ্যামরেফ হেলথ আফ্রিকা-এর প্রধান ড. গিথিনজি গিতাহি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগ এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, “ম্যালেরিয়া, এইচআইভি, যক্ষ্মা এখনও বহু তরুণের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। একইসাথে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার অবনতি তরুণদের ঝুঁকিতে ফেলছে।”
অন্যদিকে, নিম্ন আয়ের দেশগুলোর স্বাস্থ্যব্যবস্থা আন্তর্জাতিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এই সহায়তা কমে যাওয়ায়, অনেক অর্জন হুমকির মুখে পড়ছে বলে সতর্ক করেছেন আইএইচএমই-এর অধ্যাপক এমানুয়েলা গাকিদু।