যুক্তরাজ্য তাদের শরণার্থী নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। নতুন পরিকল্পনা কার্যকর হলে আশ্রয়প্রার্থীদের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতির জন্য আবেদন করতে অপেক্ষা করতে হবে ২০ বছর।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আগামী সোমবারই এ নীতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি পাঁচ বছর শরণার্থী হিসেবে থাকার পর অনির্দিষ্টকালের জন্য বসবাসের আবেদন করতে পারেন।
সরকারের দাবি, অবৈধভাবে নৌকাযোগে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ ও আশ্রয় প্রার্থনার প্রবণতা কমানোর লক্ষ্যেই এই পরিবর্তন আনা হচ্ছে। নতুন নীতিতে প্রথমে অস্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেওয়া হবে। পাশাপাশি শরণার্থীদের অবস্থা নিয়মিতভাবে পর্যালোচনা করা হবে এবং তাদের মাতৃদেশ নিরাপদ হলে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশও দেওয়া হতে পারে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, অস্থায়ী বসবাসের মেয়াদ ৫ বছর থেকে কমিয়ে আড়াই বছর করা হবে। সানডে টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ জানান, এই সংস্কার মানুষের কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে দেশ আরও বিভক্ত না হয়।
যুক্তরাজ্যের নতুন নীতির নকশায় ডেনমার্কের কঠোর অভিবাসন আইন থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া হয়েছে, যেখানে শরণার্থীরা সাধারণত দুই বছরের জন্য অস্থায়ী অনুমতি পান এবং মেয়াদ শেষে পুনরায় আবেদন করতে হয়।
নীতি পরিবর্তনের সমালোচনা করে শরণার্থী কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী এনভার সোলোমন বলেন, এই সিদ্ধান্ত অভিবাসন কমানোর বদলে মানুষকে দীর্ঘমেয়াদি অনিশ্চয়তায় ফেলবে, যা তাদের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করবে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত এক বছরে আশ্রয়ের আবেদন করেছেন ১ লাখ ৯ হাজার ৩৪৩ জন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি। সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, গত এক সপ্তাহে দেশটিতে পৌঁছেছেন ১ হাজার ৬৯ জন এবং চলতি বছরে সাগরপথে আগত শরণার্থীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩৯ হাজার ছাড়িয়েছে।