জাপানের পার্বত্য শহর হিদা–তে বাড়তে থাকা ভাল্লুকের আক্রমণ প্রতিরোধে মোতায়েন করা হয়েছে বিশেষ ধরনের ‘শিকারি ড্রোন’। চোখের মতো আলোকবাল্ব, শক্তিশালী মেগাফোন ও ধোঁয়া ছোড়ার যন্ত্রসহ তৈরি এই ড্রোন এখন পাহাড়ি অঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে ভাল্লুক তাড়ানোর নতুন প্রযুক্তি হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে দেশজুড়ে ভাল্লুকের আক্রমণে ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন—যা ২০০০ সালের পর এক বছরে সর্বোচ্চ। আহত হয়েছেন ২২০ জনেরও বেশি। সুপারমার্কেট, স্কুল থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি—সব জায়গাতেই ভাল্লুকের অনুপ্রবেশ বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গিফু প্রিফেকচারের হিদা শহরে উড়তে দেখা যাচ্ছে অদ্ভুতদর্শন ‘শিকারি ড্রোন’। ড্রোনের সঙ্গে যুক্ত বড় মেগাফোন থেকে নিরন্তর কুকুরের ঘেউ ঘেউ শোনানো হয়, আর ধোঁয়া ছোড়ার যন্ত্র ভাল্লুককে ভয় দেখিয়ে দূরে সরিয়ে রাখে।
দেশজুড়ে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় সতর্কতাবাণী টাঙানো হয়েছে এবং একা ভ্রমণ এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। ইউনেস্কো তালিকাভুক্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের শহর হিদায় বিদেশি পর্যটকদের মধ্যেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে স্থানীয় পর্যটন খাতে ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।
হিদায় ভ্রমণে আসা এক পর্যটক বলেন, “ভাল্লুকের আক্রমণ নিয়ে অনলাইনে জানতে পেরে আমরা সঙ্গে ঘণ্টা নিয়ে এসেছি সতর্কতার জন্য। ভয়ে গ্রামীণ এলাকায় না গিয়ে শহরের হোটেলেই উঠেছি।”
যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ব্রিটেন তাদের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ সতর্কতা জারি করেছে। সাপ্পোরোতে মার্কিন কনস্যুলেটের পাশের একটি পার্ক ভাল্লুক দেখা যাওয়ায় দুই সপ্তাহ বন্ধ রাখতে হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ওক ও বিচ–নাটের ফলন কমে যাওয়ায় ভাল্লুকের খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। ২০১২ সালের পর এশিয়ান ব্ল্যাক বেয়ারের সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধিও বর্তমান পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। দেশটির উত্তরাঞ্চলে চলতি মাসেই ভাল্লুক নিধনে সেনা মোতায়েন করতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।