বাউল সম্রাট ফকির লালন সাইয়ের ১৩৪ তম তিরোধান দিবসের ৩ দিনের উৎসব শনিবার রাতে শেষ হয়েছে । ভাঙ্গতে শুরু করেছে সাধুর হাট । গতকাল দুপুরে পূর্ণ সেবার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সাধুসঙ্গের মূল আনুষ্ঠানিকতা। এরপর থেকে সাইজির আখড়াবাড়ি ছেড়ে যেতে শুরু করছেন সাধু-বাউলরা। বিদায়ের শেষ বেলাতেও আখড়াবাড়িতে চলছে সাধু বাউলদের কন্ঠে সাইজির মানব দর্শনের প্রচার।
সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে, লালন বলে জাতির কি রুপ দেখলাম দুই নয়নে। শত বছর পেরিয়ে গেলেও লালনের সেই জাতির রুপ খুজে চলেছেন তার অনুসারীরা। সাইজির ৩ দিন ব্যাপী ১৩৪ তম তিরোধান দিবসের শেষ দিন গতকাল । অধিবাস , বাল্য সেবা ও পূর্র্ণ সেবার মধ্য দিয়ে ভাঙ্গতে শুরু করেছে সাধুর হাট।
কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়া আখড়া বাড়িতে শনিবার শেষ হলো লালনের ১৩৪ তম তিরোধান দিবসের আনুষ্ঠানিকতা। অশ্রু ভেজা চোখে বিদায় নিচ্ছেন সাধু ভক্ত অনুসারীরা। সাধুদের এ বিদায় যেনো বয়ে আনে মানবতাবাদী শান্তি। সমাজকে হিংসা বিদ্বেষ ভেদাভেদ ভুলতে লালনের আখড়ায় তিন দিনে জড়ো হন প্রায় দশ লাখ মানুষ।
তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠান আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শেষ হলো লালন শাহ ফকিরের তিরোধান দিবসের অনুষ্ঠানিকতা।
শেষ দিনের অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোছা. শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ।
প্রধান আলোচক হিসেবে আলোচনা করেন বিশিষ্ট লেখক ও গবেষক অ্যাডভোকেট লালিম হক, সম্মানীত অতিথি ছিলেন খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক, পিপিএম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান পুলিশ সুপার, কুষ্টিয়া, বিজিবি ৪৭-ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক, মো. মাহবুব মোর্শেদ। ছাত্র-জনতা প্রতিনিধি কুষ্টিয়া মোজাক্কির রহমান রাব্বি, মো. সাজেদুর রহমান বিপুল।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন একাডেমির আয়োজনে তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালন উন্মুক্ত মঞ্চে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিদিন আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে রাতে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে মধ্য রাত পর্যন্ত।
লালনের তিরোধান দিবসের এবারের আয়োজন ১৭ অক্টোব শুরু হয়ে চলে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত। তিন দিনের তিরোধান দিবসের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও গ্রামীণ মেলা চলবে আরও দুদিন।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে রাত সাড়ে ৭ টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলে মধ্য রাত পর্যন্ত। এর পরই ভাঙে সাধুর হাট।