ইংল্যান্ডে ১০০টিরও বেশি পুরাতন ল্যান্ডফিল (বর্জ্য ফেলার স্থান) থেকে ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক’ বর্জ্য ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্য জন্য গুরুতর ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এসব ল্যান্ডফিলগুলো ২০০০ সাল থেকে কার্যকরভাবে প্লাবিত হয়ে গেছে এবং সেখানে বিষাক্ত পদার্থ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে এসব সাইটে কি ধরনের বর্জ্য রয়েছে তার পরিষ্কার রেকর্ড নেই, ফলে বিপদ সম্পর্কে তেমন কোনো ধারণা নেই।
গ্রিনপিস ও দ্য গার্ডিয়ান কর্তৃক পরিচালিত একটি বিশদ তদন্তে দেখা গেছে যে, কিছু ল্যান্ডফিলের অংশ পাবলিক পার্ক এবং আবাসিক এলাকাগুলোর খুব কাছাকাছি অবস্থিত। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এসব সাইটে যে সব বিপজ্জনক বর্জ্য থাকতে পারে, তা এমন রাসায়নিক পদার্থ, ভারী ধাতু, এবং এমনকি সায়ানাইড বা তরল স্লাজের মতো বিপজ্জনক বর্জ্য হতে পারে।
এই ল্যান্ডফিলগুলো ছিল বিশেষভাবে শিল্প বর্জ্য বা ‘বিশেষ’ ধরনের বর্জ্য ফেলার জন্য ব্যবহৃত, যেমন কেমিক্যাল বা ভারী ধাতু। তবে, ১৯৪৫ সালের পর, বিশেষ করে ১৯৯০ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত ল্যান্ডফিল সাইটে ফেলা বর্জ্যের বিষয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট রেকর্ড রাখা হয়নি।
স্থানীয় সরকার এবং কর্তৃপক্ষ বলেছে যে, এমনকি কিছু ল্যান্ডফিল সাইটের ইতিহাস জানাও সম্ভব নয়, কারণ পুরনো তথ্য খুবই দুর্বল ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক জায়গায় এসব ল্যান্ডফিলের বিপদ সম্পর্কে কিছুই জানানো হয়নি যতক্ষণ না সেখানে খনন করা হয়।
অনেক সাইটে যেগুলো ছিল ‘নিরাপদ’ বা যেখানে শুধুমাত্র গৃহস্থালি বর্জ্য ফেলা হতো, সেগুলো এই তদন্তের বাইরে রাখা হয়েছে। তবে, অন্য সাইটগুলোতে যে ধরনের বিপজ্জনক পদার্থ থাকতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এটি আরও দেখা গেছে যে, বিপজ্জনক পদার্থযুক্ত ২,৬০০টি সাইট জলাধারের ৫০ মিটার এলাকায় অবস্থিত, যেগুলোতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না এবং বেশিরভাগই অবহেলিত ছিল।
তহবিলের অভাব সঠিক তদন্ত এবং সংস্কারের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৭ সালের পর, সঠিকভাবে দূষিত জমি মেরামত করার জন্য তহবিলের সংকট বেড়েছে। পরিবেশ বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি তহবিলের অভাবে এসব সাইটের পরিস্থিতি সঠিকভাবে পর্যালোচনা না করা হয়, তাহলে বহু বছরের পরিত্যক্ত বর্জ্য পরিবেশে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।
এছাড়া, নতুন আইন প্রণয়নের দাবী জানিয়ে গ্রিনপিস এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলো বলছে, ল্যান্ডফিলের রেকর্ড আরও সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা এবং সেগুলোর সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আরও তহবিল বরাদ্দ করা উচিত, কারণ জলবায়ু পরিবর্তন ও বন্যার মতো পরিস্থিতি এই দূষিত পদার্থগুলো পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ করে দিতে পারে।
মোট কথা, এই সমস্ত ল্যান্ডফিল সাইটগুলো দ্রুত সংস্কার এবং সঠিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত না করলে পরিবেশ ও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।