যুক্তরাজ্যে অভিবাসন আইন কঠোর হওয়ার কারণে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি বড় বিপদে পড়েছেন। সরকার স্পনসর লাইসেন্সের অপব্যবহার বন্ধ করতে অভিযান চালাচ্ছে। এতে অনেক কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল হয়ে গেছে। ফলে বহু বিদেশি কর্মী—including বাংলাদেশিরা—চাকরি হারিয়েছেন এবং ভিসা বাতিলের আশঙ্কায় রয়েছেন।
একজন বাংলাদেশি জানান, তিনি মাস্টার্স শেষ করে একটি কেয়ার কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা পেয়েছিলেন। কাজ শুরুর আগে কোম্পানি ছয় মাস ধরে তাকে অপেক্ষায় রেখেছিল এবং নানা কাগজপত্রের জন্য টাকা চেয়েছিল। পরে তিনি জানতে পারেন, কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল হয়েছে। এরপর আর কোনো খোঁজ নেয়নি কোম্পানিটি। এখন তিনি শত শত চাকরির আবেদন করেও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না।
আরেকজন বলেন, তিনি রমজান মাসে প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টা করে কাজ করেছেন, এমনকি অসুস্থ অবস্থায় ডাক্তারের কাছেও যেতে পারেননি। কোম্পানি লাইসেন্স হারালেও তাকে কাজ করাতে থাকে। এখন তিনি ধার করে চলছেন, কিন্তু কোথাও থেকে সাহায্য পাচ্ছেন না।
যুক্তরাজ্যে বিদেশি কর্মী নিতে হলে কোম্পানির স্পনসর লাইসেন্স দরকার। ২০২২ সালে কেয়ার খাতে লোকবলের অভাবে সরকার বিদেশি কর্মীদের জন্য স্কিল্ড ওয়ার্কার ভিসার সুযোগ দেয়। কিন্তু অনেক কোম্পানি যথাযথ যাচাই ছাড়াই স্পনসর লাইসেন্স নেয়, যা এখন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
একটি মানবাধিকার সংস্থার আইনজীবী জানান, সরকারের এই খাতে পর্যাপ্ত যাচাই না করায় আজ প্রবাসীরা বিপদে পড়েছেন। ২০২৪ সালে ১,৫১৪টি কোম্পানির লাইসেন্স বাতিল হয়েছে—যার ফলে প্রায় ৩৯,০০০ কর্মী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সরকার এখন এইসব কোম্পানিকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করছে এবং যারা কর্মীদের কাছ থেকে বেআইনিভাবে টাকা নেয়, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে বাস্তবে প্রবাসীরা এখনো নানা অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন—না পাচ্ছেন নতুন স্পনসর, না পাচ্ছেন হোম অফিস থেকে সাড়া।