কোরবানি এবং জাকাতের ক্ষেত্রে ইসলামে “নেসাব” পরিমাণ সম্পদের মালিক হওয়া শর্ত। তবে এ দুটির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে।
জাকাতের জন্য নেসাব পরিমাণ সম্পদ একটানা এক বছর মালিকানায় থাকা বাধ্যতামূলক।
কোরবানির জন্য এই শর্ত নেই। অর্থাৎ, কেউ যদি কোরবানির দিনগুলো—১০ থেকে ১২ জিলহজ—এর মধ্যে ফজরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত যেকোনো সময়ে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
ঋণ থাকলে কোরবানি?
যদি কেউ সাময়িকভাবে ঋণগ্রস্ত থাকেন এবং ঋণ পরিশোধ করার পর তার কাছে নেসাব পরিমাণ সম্পদ না থাকে, তাহলে তার ওপর কোরবানি আবশ্যক নয়।
অন্যদিকে, যদি ঋণ পরিশোধ করার পরও নেসাব পরিমাণ সম্পদ বাকি থাকে, তাহলে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে।
কোন সম্পদগুলো নেসাব হিসাবে গণ্য হয়?
নেসাব পরিমাণ সম্পদের হিসাবের ক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত হয়:
-
নগদ অর্থ
-
সোনা-রুপা ও অলংকার
-
ব্যবসায়িক পণ্য
-
প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি, বাড়ি-গাড়ি, আসবাবপত্র ইত্যাদি
খাদ্য, বাসস্থান বা দৈনন্দিন ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী এই হিসাবের অন্তর্ভুক্ত নয়।
কত টাকা থাকলে কোরবানি ওয়াজিব?
কোরবানির নেসাব নির্ধারণ করা হয় সাড়ে ৫২ ভরি রুপার বাজারমূল্যের ভিত্তিতে। ১ জুন ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নির্ধারিত দর অনুযায়ী:
-
২২ ক্যারেট রুপার সাড়ে ৫২ ভরির মূল্য: ১,১০,১৮৭ টাকা
-
২১ ক্যারেট: ১,০৫,২৯০ টাকা
-
১৮ ক্যারেট: প্রায় ৯০,০০০ টাকা
-
সনাতন পদ্ধতির রুপা: ৬৭,৩৩৭ টাকা
এই হিসাবে, ন্যূনতম ৬৭ হাজার টাকা বা সমমূল্যের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ যার আছে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। তবে মনে রাখতে হবে, যেহেতু কোরবানি ১০-১২ জিলহজ সময়ে ওয়াজিব হয়, তাই সেসব দিনের রুপার বাজারমূল্য অনুসারে হিসাব করতে হবে।
সারসংক্ষেপ
যদি কোরবানির সময় ঋণ পরিশোধ করার পরও কারো কাছে নেসাব পরিমাণ প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ থাকে, তবে তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। না থাকলে নয়।