যুক্তরাজ্যের সাউথপোর্টে অবস্থিত এলার্সলি কোর্ট কেয়ার হোমে বাসিন্দাদের জীবন এখন চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। কেয়ার কোয়ালিটি কমিশন (CQC)-এর সর্বশেষ পরিদর্শনে উঠে এসেছে ভয়াবহ অব্যবস্থাপনার চিত্র—অপ্রশিক্ষিত কর্মী, নোংরা পরিবেশ ও নিরাপত্তাহীনতায় জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠান।
পরিদর্শকরা জানান, কেয়ার হোমের পুরো ভবনে তীব্র দুর্গন্ধ, অপরিচ্ছন্ন বিছানা, এবং ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধির ঘাটতি চোখে পড়ে। বাসিন্দারা সময়মতো সেবা পাচ্ছেন না। এক বাসিন্দা ২৬ বার পড়ে গিয়ে পাঁচবার গুরুতর আহত হলেও, সেই তথ্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি।
নেতৃত্বের ঘাটতির কারণে কর্মীসংকট চরমে পৌঁছেছে। এর ফলে এক বাসিন্দাকে টানা পাঁচ ঘণ্টা হুইলচেয়ারে বসে থাকতে হয়েছে, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে। ওষুধ ব্যবস্থাপনাও মারাত্মকভাবে ব্যর্থ—আটজন বাসিন্দা নির্ধারিত ওষুধই পাননি।
পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাবে অভিজ্ঞতাহীন কর্মীরাই নতুন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, ফলে সেবার মান দিন দিন আরও নিচে নেমে যাচ্ছে।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থাও অপ্রতুল। এক ফায়ার এক্সিট দরজা ধূমপানের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল, যা অ্যালার্ম বারবার বেজে উঠার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিছু কক্ষের আসবাবপত্র দেয়ালে সুরক্ষিত না থাকায় যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
পরিদর্শকরা অভিযোগ করেন, এখানে কোনো সুরক্ষামূলক সংস্কৃতি নেই। বাসিন্দাদের উদ্বেগ ও নিরাপত্তার বিষয়গুলো অবহেলা করা হচ্ছে। কর্মীদের মনোবল এতটাই নিচে যে তারা বাসিন্দাদের সঙ্গে আন্তরিক সম্পর্ক গড়তেও অনাগ্রহী, যার ফলে বাসিন্দারা নিঃসঙ্গতায় ভুগছেন।
এই পরিস্থিতিতে CQC এলার্সলি কোর্টকে ‘বিশেষ ব্যবস্থার’ আওতায় এনেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উন্নতি না হলে প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিলসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলার্সলি কোর্ট কেয়ার হোম এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস