যুক্তরাজ্যে ভুয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপ করে গত এক বছরে ১১,৫০০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান বাতিল করেছে কোম্পানিজ হাউজ। এসব প্রতিষ্ঠান প্রতারণা, অর্থপাচার ও আর্থিক অপরাধে জড়িত সন্দেহে রেজিস্টার থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইকোনমিক ক্রাইম সেন্টার (NECC)-এর নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অংশ নেয় HMRC, ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি, কোম্পানিজ হাউজ ও বিভিন্ন পুলিশ বাহিনী। অভিযানে দেখা যায়, অনেক কোম্পানি রেজিস্ট্রেশনের প্রাথমিক শর্ত পূরণেই ব্যর্থ হয়েছে।
মাত্র দুই দিনের অভিযানে মেট্রোপলিটন, সিটি অফ লন্ডন এবং সাউথ ওয়েলস পুলিশ যৌথভাবে ১১টি স্থানে হানা দেয়। এক লন্ডন ঠিকানায় একাই ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ কোম্পানি নিবন্ধনের তথ্য মিলেছে—তবে সেগুলোর কোনো বাস্তব কার্যক্রম নেই।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব প্রতিষ্ঠানের অনেকেই কেবল কাগজে-কলমে রয়েছে, কার্যত ব্যবসা নেই। এর ফলে কয়েকটি উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ ট্রাস্ট ও সার্ভিস প্রোভাইডার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং আরও ২৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার করা সম্পদ বর্তমানে সিভিল রিকভারি আইনের আওতায় রয়েছে।
এই উদ্যোগ ‘ইকোনমিক ক্রাইম অ্যান্ড কর্পোরেট ট্রান্সপারেন্সি অ্যাক্ট (ECCTA)’ কার্যকরের প্রস্তুতির অংশ। নতুন আইনে কোম্পানি পরিচালক ও এজেন্টদের পরিচয় যাচাই বাধ্যতামূলক হবে। যদিও কোম্পানিজ হাউজ জানায়, ৭ মিলিয়নের বেশি মানুষের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ২.৮৬ শতাংশই যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন।
কোম্পানিজ হাউজের গোয়েন্দা পরিচালক মার্টিন সোয়াইন বলেন, “কিছু এজেন্ট ইচ্ছাকৃতভাবে অপরাধে যুক্ত। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং তা চলবে।”
ন্যাশনাল ইকোনমিক ক্রাইম সেন্টারের প্রধান র্যাচেল হার্বার্ট যোগ করেন, “প্রতি বছর যুক্তরাজ্যে £১০০ বিলিয়নের বেশি অর্থ পাচার হয়, যার একটি বড় অংশ হয় কোম্পানি ব্যবস্থার অপব্যবহারের মাধ্যমে।”
ইনসলভেন্সি সার্ভিসের পরিচালক ডেভ ম্যাগ্রাথ বলেন, “১১,৫০০ কোম্পানি বাতিলের মধ্য দিয়ে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, রেজিস্টার শুধুমাত্র প্রকৃত ব্যবসাগুলোর জন্য ব্যবহৃত হবে।”
সরকার আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ‘প্রতারণা প্রতিরোধে ব্যর্থতা’ আইনসহ আরও কঠোর বিধান কার্যকর করতে যাচ্ছে।
সূত্র: ইয়াহু ফাইন্যান্স