যুক্তরাজ্যে লেবার পার্টির বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে চরম রাজনৈতিক সংকটে রয়েছেন। এক সময় লেবার সরকারের মন্ত্রী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকলেও, বাংলাদেশে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
সম্প্রতি বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর টিউলিপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে প্রায় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আত্মসাতের সঙ্গে তিনি ও তার পরিবারের চার সদস্য জড়িত। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছে। একইসঙ্গে জমি ও প্লট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়েও তদন্ত চলছে।
৪২ বছর বয়সী টিউলিপ যুক্তরাজ্যে আগে অর্থনৈতিক অপরাধ দমন ও আর্থিক নীতি তদারকির মতো দায়িত্বে ছিলেন। সেই পটভূমিতে তার বিরুদ্ধে ওঠা এই অভিযোগগুলো তাকে আরও বেশি রাজনৈতিক চাপের মুখে ফেলেছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরে গেলে টিউলিপ সাক্ষাতের জন্য অনুরোধ জানান। তবে উপদেষ্টা তা প্রত্যাখ্যান করেন। এই ঘটনা নিয়ে টিউলিপ প্রকাশ্যে হতাশা প্রকাশ করেন এবং বলেন, “আমার বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ ছাড়াই রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চালানো হচ্ছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মন্ত্রিত্ব হারিয়ে এখন টিউলিপ নিজের অবস্থান রক্ষার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি লেবার পার্টির বর্তমান নেতা ও প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ধরে রাখার চেষ্টা করছেন। তবে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক মন্দা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে, লেবার সরকার নিজেই চাপের মুখে রয়েছে—এই পরিস্থিতিতে টিউলিপের জন্য নতুন রাজনৈতিক অবস্থান তৈরি করা হয়ে উঠছে কঠিন।
বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের তদন্তে যদি টিউলিপের বিরুদ্ধে আরও প্রমাণ উঠে আসে, তবে তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বড় ধরনের ধাক্কা খেতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যেও আইনগত ও রাজনৈতিক চাপে তার ভবিষ্যৎ কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।