সিলেটে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন হবে হারিছ চৌধুরীর লাশ
বহুল আলোচিত প্রয়াত রাজনীতিক হারিছ চৌধুরীর কবর ঢাকা থেকে সিলেটে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে কবরের জায়গাও নির্ধারণ করেছেন পরিবারের স্বজনরা। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হারিছ চৌধুরীর কবর হবে তার নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত কানাইঘাটের শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানায়।
শুক্রবার দুপুরে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাজরিনের উপস্থিতিতে প্রয়াত আবুল হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা তানজিম চৌধুরীসহ আত্মীয়-স্বজনদের উপস্থিতিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর পিতা শফিকুল হক চৌধুরীর স্মৃতি রক্ষা ও মানবতার সেবার লক্ষ্যে শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হারিছ চৌধুরী নিজেই। এই এতিমখানা প্রাঙ্গণেই অন্তিম ঠিকানা হচ্ছে হারিছ চৌধুরীর।
আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর চলতি মাসেই আবুল হারিছ চৌধুরীর কবর স্থানান্তর হবে বলে তার মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সেভাবে মুক্তিযোদ্ধার সম্মাননায় প্রয়াত কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ চৌধুরীর কবর এতিমখানা প্রাঙ্গণে হবে। কবরের জায়গার স্থান সেভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
কবরের স্থান নির্ধারণের সময় উপস্থিত কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ফয়ছল আহমদ বলেন, বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়েছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ; কিন্তু তিনি দেশ থেকে কোথাও পালিয়ে যাননি, তিনি ঢাকাতে আত্মগোপনে ছিলেন। স্বাধীন দেশে মুক্তভাবে হারিছ চৌধুরীর লাশ তার নিজ এলাকা সিলেটের কানাইঘাটে এখন দাফন করা হবে।
হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা নানাভাবে অবিচারসহ হয়রানির শিকার হয়েছি। আমার বাবা মারা যাওয়ার পরও সেই সময় সরকারকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাইনি। উল্টো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং তার মৃত্যুর বিষয়টি অমীমাংসিত থেকে যায়। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বাবার লাশ শনাক্ত করে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কানাইঘাটে দাফন করতে পারব, যার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।
প্রসঙ্গত, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবুল হারিছ চৌধুরী মারা যান। ৪ সেপ্টেম্বর প্রফেসর মাহমুদুর রহমান নামে ঢাকার সাভারে একটি মাদ্রাসায় তার লাশ দাফন করা হয়। এরপর আবুল হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী প্রফেসর মাহমুদুর রহমানই তার পিতা আবুল হারিছ চৌধুরী দাবি করে লাশের পরিচয় শনাক্ত করার জন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হলে আদালতের নির্দেশে তার লাশ কবর থেকে তোলা হয়। এরপর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। একুশ আগস্টের গ্রেনেড হামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে।