দলীয় নির্বাচন বর্জন করে আওয়ামী লীগের অধীনে অংশ না নিয়ে রাজনৈতিক আনুগত্যের যে বার্তা দিয়েছেন, তারই স্বীকৃতি হিসেবে ফের সিলেট সিটি করপোরেশনে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, তাকে সিসিকের ‘ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। বিষয়টি সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যেও আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
দুই মেয়াদে—২০১৩ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত—সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছেন আরিফুল। এবার তিনি ফিরছেন প্রশাসক হিসেবে, তবে নির্বাচিত মেয়র নয়, বরং সরাসরি সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত একজন প্রশাসক হিসেবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বর্তমানে যেসব অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক বিভিন্ন সিটিতে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেক জায়গায় সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। তাই আলাদা করে অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার আওতায় রয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশনও।
সম্প্রতি, ১৭ এপ্রিল ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন আরিফুল, এরপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একজন সচিবের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রশাসনিক যোগাযোগ শুরু করেন তিনি, যা এখন নিয়োগের দ্বারপ্রান্তে।
শুধু আরিফুল নয়, বিএনপির আরও তিনজন সাবেক মেয়র—ময়মনসিংহের ইকরামুল হক টিটু, বরিশালের কামরুজ্জামান কামরান ও খুলনার নজরুল ইসলাম মঞ্জুও প্রশাসক হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে প্রশাসকের দায়িত্ব চেয়ে চিঠিও দিয়েছেন।
এই চার বিএনপি নেতার সম্ভাব্য পুনরাগমনে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলছে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানিয়েছে, মেয়াদোত্তীর্ণ করপোরেশনগুলোতে প্রশাসক নিয়োগের বিধান অনুযায়ী আলাদা করে প্রশাসক নিয়োগের প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয়েছে। তার অনুমোদন মিললেই এ নিয়োগ কার্যকর হবে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, “আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মেয়রের দায়িত্ব পালন করেছি। এখন যদি আবার সুযোগ আসে, আমি আগের মতোই জনগণের সেবা করতে প্রস্তুত।”