বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ রোববার (১ জুন) সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) দাখিল করা হবে। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই ফরমাল চার্জ পেশ করবেন।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও ওই সময়ের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই সময়ের মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যাকাণ্ড ও লাশ পুড়িয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন অমানবিক ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন শেখ হাসিনা।
ট্রাইব্যুনাল ফরমাল চার্জ গ্রহণের পর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কার্যক্রম শুরু হবে। যেসব আসামি গ্রেফতার, তাদের আইনজীবীদের প্রস্তুতির জন্য সময় দেওয়া হবে। বিচার কার্যক্রমের স্বচ্ছতার লক্ষ্যে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) আজ সরাসরি সম্প্রচার করবে।
প্রসিকিউশনের মতে, অভিযোগগুলোতে ১৪ জুলাইয়ের প্রেস কনফারেন্সে শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে অভিহিত করার কথা উল্লেখ রয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে ছাত্র ও আন্দোলনকারীদের ওপর সহিংসতা চালাতে উসকানি দেয়। এছাড়া, শেখ হাসিনার টেলিফোন আলাপচারিতায় রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে সশস্ত্র হামলা চালানোর নির্দেশের আলামত রয়েছে।
তদন্ত সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রায় দেড় হাজার মানুষ নিহত এবং ২৫ হাজারের বেশি আহত হয়েছেন। নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতা, লাশ পুড়িয়ে ফেলা, আহতদের চিকিৎসা বাধাগ্রস্ত করার মতো অভিযোগও রয়েছে।
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে একটি গুম-খুনের ঘটনা এবং অন্যটি মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
২০১৩ সালের পর থেকে দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই মামলার গুরুত্ব বাড়ছে। বর্তমানে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন এবং আন্তর্জাতিক আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।