ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টানা তৃতীয় বছরের মতো আয়ের ঘাটতির মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছে উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘অফিস ফর স্টুডেন্টস’ (OfS)। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় এই প্রবণতা আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
OfS-এর বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় খরচ কমাতে কোর্স ও কর্মী হ্রাসের পাশাপাশি ভবন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে কাটছাঁট করছে। চলতি অর্থবছরে এই খাত ৪০০ মিলিয়ন পাউন্ডের বেশি মূল্যের জমি ও সম্পত্তি বিক্রি করতে পারে।
OfS-এর নিয়ন্ত্রক পরিচালক ফিলিপা পিকফোর্ড বলেন, “২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর ভর্তি হার প্রায় ২১% কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে প্রায় অর্ধেক বিশ্ববিদ্যালয় আগামী বছর ঘাটতির সম্মুখীন হতে পারে।”
অর্থনৈতিক চাপ সামাল দিতে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চ টিউশন ফি আদায় করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর উপর নির্ভর করে। তবে সাম্প্রতিক ভিসা ও অভিবাসন নীতির কড়াকড়িতে ২০২৩ সাল থেকে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আয়ে।
বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ইউনিয়নের মহাসচিব জো গ্রেডি জানান, আর্থিক সংকটে ইতোমধ্যে প্রায় ১০,০০০ চাকরি হারিয়ে গেছে। তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ওপর কড়াকড়ি শিথিল করার।
এক জরিপে দেখা গেছে, ৫১% ব্রিটিশ নাগরিক মনে করেন বিদেশি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পর যুক্তরাজ্যে থেকে কাজ করা উচিত। এর মধ্যে সংস্কারের পক্ষে থাকা ৩৩% ভোটারও রয়েছেন।
OfS বলছে, তারা এখনও স্বল্পমেয়াদে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা দেখছে না, তবে দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে হলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের জন্য আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনার পরামর্শও দিয়েছেন পিকফোর্ড।
OfS আরও জানিয়েছে, তারা আর্থিক ঝুঁকিতে থাকা কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এবং প্রয়োজনে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে।
OfS-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাজার প্রতিযোগিতা ২০২৭-২৮ সালের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘাটতির মুখে ঠেলে দিতে পারে।
এদিকে শিক্ষা সচিব ব্রিজেট ফিলিপসন বলেছেন, এই পরিস্থিতি গার্হস্থ্য টিউশন ফি বাড়ানোর যৌক্তিকতা প্রমাণ করে। তিনি জানান, উচ্চশিক্ষায় স্থায়িত্ব আনতে এই গ্রীষ্মেই একটি শ্বেতপত্রে নতুন সংস্কার উদ্যোগ নেওয়া হবে।