যুক্তরাজ্য সরকারের প্রধান ওয়েবসাইট GOV.UK-এর লোগোতে থাকা একটি ফুলস্টপ বা “ডট” প্রতিস্থাপন করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৫০০,০০০ পাউন্ড। বিষয়টি ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক, কারণ এই একটি ডিজাইন পরিবর্তনের জন্য তৈরি করা হয়েছে ১৫০ পৃষ্ঠার নির্দেশিকা, যা ব্রিটেনের সাম্প্রতিক কৌশলগত প্রতিরক্ষা পর্যালোচনার থেকেও দীর্ঘ।
হোয়াইটহল প্রকাশিত নতুন ব্র্যান্ড নির্দেশিকা অনুযায়ী, GOV.UK লোগোর “GOV” এবং “UK”-এর মাঝখানে থাকা ফুলস্টপটিকে নিচ থেকে সরিয়ে মাঝ বরাবর স্থাপন করা হয়েছে। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি কেবল একটি গ্রাফিক পরিবর্তন নয়, বরং একটি “ধারণাগত উপাদান”, যা “সরকার এবং জনগণের মধ্যে সেতুবন্ধনের প্রতীক”।
নির্দেশিকায় ফুলস্টপ বা ডটটিকে বর্ণনা করা হয়েছে “একটি পথপ্রদর্শক হাত” হিসেবে, যা সরকারি সেবা ও তথ্যের ভিজ্যুয়াল উপস্থাপনায় ব্যবহার করা হবে—যেমন কর পরিশোধ, ছাত্রঋণ যাচাই বা নাগরিক তথ্য প্রদান।
নতুন লোগোটি ব্যবহার করা হবে GOV.UK অ্যাপ এবং GOV.UK ওয়ালেট-এও, যা মোবাইল ফোনে সরকারি নথি সংরক্ষণের জন্য ডিজাইন করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ সরকার যেখানে ব্যয় সংকোচনের কথা বলছে, সেখানে একটিমাত্র গ্রাফিক উপাদানের জন্য অর্ধ-মিলিয়ন পাউন্ডের খরচ করদাতাদের ক্ষোভের কারণ হয়ে উঠেছে।
রিফর্ম ইউকে দলের সরকারি দক্ষতা বিভাগের প্রধান জিয়া ইউসুফ এ প্রসঙ্গে বলেন,
“৫ লাখ পাউন্ড খরচ করে সরকারি ওয়েবসাইটে একটি ফুলস্টপ সরানো মানে করদাতাদের অর্থের প্রতি সরাসরি অবহেলা। এই ধরনের কাজ করদাতাদের প্রতি উপহাস ছাড়া কিছু নয়।”
তিনি আরও বলেন, এই খরচ এক বছরে ৪৩টি গড় ব্রিটিশ পরিবারের দেওয়া আয়করের সমান, যা গ্রহণযোগ্য নয়।
প্রকাশিত ১৫০ পৃষ্ঠার ডসিয়ারে ডটটির সম্ভাব্য ব্যবহার সম্পর্কে বিস্তৃত বিবরণ দেওয়া হয়েছে। যেমন:
-
একটি পিগিব্যাঙ্কে কয়েন ফেলার প্রতীক হিসেবে,
-
ভোট দেওয়ার ধাপ ব্যাখ্যা করতে একটি “টেক্সট বুদবুদ” হিসেবে,
-
কিংবা ব্যবহারকারীদের নির্দেশনা দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে।
নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
“ডটটি GOV.UK-এর বিভিন্ন চ্যানেলে, গ্রাফিক্সে ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের গাইড করতে ব্যবহৃত হবে। তবে তা সর্বদা একটি স্পষ্ট উদ্দেশ্য পূরণ করতে হবে।”
এই লোগো পরিবর্তনের খরচ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং রাজনৈতিক মহলে হাস্যরস ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের ব্যয় সরকারের খরচের অগ্রাধিকারের প্রশ্ন তোলে, বিশেষ করে যখন জনসেবা খাতে অর্থ সংকোচ চলছে।
সরকার যদিও দাবি করছে, এটি একটি বৃহৎ ডিজিটাল আধুনিকায়ন প্রকল্পের অংশ—তবু সমালোচকরা একে “লজ্জাজনক অগ্রাধিকার” এবং “নির্বিচার ব্যয়” হিসেবে দেখছেন।