আসন্ন ঈদুল আজহায় সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা ১০ দিনের ছুটিতে রাজধানী ছেড়ে গ্রামে যাচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। তবে এই ফাঁকা ঢাকা ও মহাসড়কে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির আশঙ্কা বাড়িয়েছে জনমনে উদ্বেগ।
শহরে বাড়ছে চুরি, মহাসড়কে ডাকাতির আতঙ্ক
ফাঁকা বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে চুরি-ডাকাতির আশঙ্কা করছেন নগরবাসী। অন্যদিকে মহাসড়কে যাত্রীবাহী বাস, এমনকি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সও ডাকাতির কবলে পড়ছে। চালক ও পরিবহন সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, হাইওয়ে পুলিশ যথাযথভাবে টহলে না থাকায় নিরাপত্তা শঙ্কা বেড়েছে।
চালকদের অভিজ্ঞতা
বাসচালকরা জানান, বিভিন্ন মহাসড়কে প্রায়ই ডাকাতি হচ্ছে। তারা বলেন, চলন্ত বাসে ঢিল ছোড়া, চাকায় আঘাতসহ নানা রকম হামলা চালাচ্ছে ডাকাতরা। মহাসড়কে পুলিশের উপস্থিতি কম, যা অপরাধ বাড়ার সুযোগ করে দিচ্ছে।
পুলিশের প্রস্তুতি
পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঈদ উপলক্ষে তিন ধাপের নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে—ঈদের আগে, সময় এবং পরে। চেকপোস্ট বাড়ানো, সাদা পোশাকে নজরদারি, রাতব্যাপী টহল ও ‘মানি এসকট’ সুবিধা চালু রাখা হয়েছে। নাগরিকদের যেকোনো প্রয়োজনে ‘৯৯৯’ নম্বরে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
র্যাব ও হাইওয়ে পুলিশের উদ্যোগ
র্যাব জানায়, গরুর হাট ও মহাসড়কে বাড়তি নিরাপত্তা, গোয়েন্দা নজরদারি এবং সাইবার পেট্রোল জোরদার করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশও জানায়, প্রায় ৫ হাজার সদস্য সড়কে কাজ করছেন এবং শীর্ষ কর্মকর্তারাও সরাসরি মাঠে আছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির উদ্বেগ
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, দেড় কোটির বেশি মানুষ ঢাকাসহ বিভিন্ন শহর থেকে গ্রামে যাবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল থাকলে অপরাধ বেড়ে যেতে পারে। শুধু ঈদের সময় নয়, পুরো ছুটি জুড়েই নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
অপরাধ বিশ্লেষকের মতামত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, ঈদের সময় অপরাধ বাড়ে, বিশেষ করে গরুর হাট ও ফাঁকা বাসায় চুরি-ডাকাতির ঘটনা। তিনি সিসি ক্যামেরা সক্রিয় রাখা, স্ট্রিটলাইট বাড়ানো এবং প্রযুক্তিনির্ভর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ দেন।