লেবার পার্টির নির্বাচনী জয়ের পর, যুক্তরাজ্যের বহু মধ্যবিত্ত পরিবার দক্ষিণ ইউরোপের দেশগুলিতে বসবাসের জন্য দেশ ছাড়ছে। বিশেষ করে গ্রিস ও পর্তুগালে গোল্ডেন ভিসার জন্য ব্রিটিশদের আবেদন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।
নতুন পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গ্রিসে গত বছরের তুলনায় গোল্ডেন ভিসা আবেদনের সংখ্যা ৪৬.৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২৬টিতে। গ্রিসে কমপক্ষে ২৫০,০০০ ইউরো মূল্যের সম্পত্তিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে পাঁচ বছরের আবাসিক পারমিট ও ভবিষ্যতে ইইউ নাগরিকত্বের সুযোগ মিলছে।
একইভাবে, ২০২৪ সালে পর্তুগালে ব্রিটিশ আবেদনকারীর সংখ্যা ৬৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৮৯-এ। দেশটি গ্রিসের মতোই বিনিয়োগের মাধ্যমে আবাসিক সুবিধা এবং নাগরিকত্বের পথ খুলে দিয়েছে।
বিশ্বব্যাপী অভিবাসন সংস্থা অ্যাস্টন্স জানিয়েছে, ব্রিটেন থেকে গোল্ডেন ভিসার চাহিদা বাড়ার পেছনে কর নীতির বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির বিশেষজ্ঞ আলেনা লেসিনা বলেন, আবেদনকারীদের মধ্যে এখন শুধু ধনীরা নয়, বরং মধ্যবিত্ত পরিবার, রিমোট ওয়ার্কার এবং অবসরপ্রাপ্তরাও রয়েছেন। তাদের অনেকেই মহামারির পর জীবনযাত্রা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা পুনর্মূল্যায়ন করছেন।
স্পেনেও ২০২৩ সালে গোল্ডেন ভিসার আবেদন বেড়ে দাঁড়ায় ৩,৬০১টিতে, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি। তবে দেশটি এপ্রিলে এই স্কিমটি বন্ধ করে দেয়। ইউরোপ ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাতেও ব্রিটিশদের স্থানান্তরের হার বেড়েছে।
বিরোধী দল বলছে, এই প্রবণতা র্যাচেল রিভসের কর নীতির নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া। ছায়া ব্যবসায় সচিব অ্যান্ড্রু গ্রিফিথের মতে, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও দক্ষ নাগরিকদের দেশত্যাগ যুক্তরাজ্যের জন্য ক্ষতিকর বার্তা বহন করে।
চ্যান্সেলর রিভস এরইমধ্যে বিত্তশালীদের ওপর কর বাড়িয়েছেন, নন-ডোম সুবিধা বাতিল করেছেন এবং উত্তরাধিকার কর কঠোর করেছেন। কিন্তু কর সংগ্রহে ঘাটতির আশঙ্কায় কিছু নীতিতে পিছিয়ে আসার কথা ভাবছেন তিনি।
এদিকে, ট্রেজারি বিভাগের দাবি, যুক্তরাজ্যের কর ব্যবস্থা এখনও ন্যায্য ও প্রগতিশীল। তারা বলছে, জি৭ দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাজ্যে মূলধন লাভ করের হার সবচেয়ে কম এবং তারা শ্রমজীবী মানুষের করের বোঝা হ্রাসে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।