ইংলিশ চ্যাম্পিয়নশিপে বার্নলির বিপক্ষে হারের পর বিতর্কিত ঘটনার শিকার হয়েছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডের হয়ে খেলা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। ম্যাচ শেষে মাঠে ঢুকে পড়া বার্নলি সমর্থকদের এক বা একাধিক জন হামজার সঙ্গে বচসায় জড়ান। ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে পড়েন হামজা, যার রেশ ছড়িয়েছে ইংলিশ ফুটবল অঙ্গনে।
শেফিল্ড ইউনাইটেড সোমবার রাতে বার্নলির কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়। এই জয়ের মাধ্যমে বার্নলি নিশ্চিত করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে সরাসরি উন্নীত হওয়ার টিকিট, আর শেফিল্ড নামিয়ে যায় প্লে-অফের লড়াইয়ে। তবে ম্যাচ শেষে বিজয় উদ্যাপন করতে মাঠে ঢুকে পড়া বার্নলি সমর্থকদের আনন্দ মুহূর্তেই বিতর্কে রূপ নেয়।
বাংলাদেশি মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী পুরো ম্যাচে মাঠে ছিলেন। দলের হার সত্ত্বেও তিনি ছিলেন সক্রিয় ও উজ্জ্বল। কিন্তু ম্যাচের পরই কিছু সমর্থক তার দিকে ঠাট্টা-বিদ্রূপ ছুঁড়ে দেন, যা দ্রুতই উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডায় রূপ নেয়। গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়, হামজা চৌধুরী বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন—তার উদ্দেশে বর্ণবিদ্বেষমূলক ভাষা ব্যবহার করা হয়।
স্কাই স্পোর্টসের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এক পুলিশ কর্মকর্তা হামজাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছেন এবং পরে স্টাফ ও নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে টানেলে নিয়ে যান।
শেফিল্ড কোচ ক্রিস ওয়াইল্ডার ঘটনার পর হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “রেফারি আগেই বলেছিলেন আমাদের চারপাশে স্টুয়ার্ড থাকবে। কিন্তু তারা ছিল কোথায়? মাঠের শেষদিকের পরিস্থিতি ছিল ভয়ংকর। দর্শকরা আমাদের লক্ষ্য করে কিছু ছুঁড়ে মারছিল।”
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ না দিলেও তিনি বলেন, “এই ঘটনা বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল না। ফুটবল ক্লাবটি কিংবা নিরাপত্তাকর্মীরা আমাদের সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত ছিল বলে মনে হয়নি।”
শেফিল্ড ইউনাইটেড এরই মধ্যে চলতি মৌসুমে একাধিকবার খেলোয়াড়দের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হওয়ায় জরিমানা গুনেছে। এবার রেফারির রিপোর্টে এই ঘটনাটি উল্লেখ করা হলে ক্লাব কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়টি তুলে ধরার কথা ভাবছে।
হামজা চৌধুরীর সঙ্গে যা ঘটেছে, তা শুধু মাঠের লড়াইয়ে নয়, ফুটবলের বাইরে সচেতনতার প্রশ্নও সামনে এনেছে। ফুটবলে বর্ণবাদ ও খেলোয়াড় নিরাপত্তা—এই দুটি বিষয়ে এখন আরও জোরালো অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন সমর্থকরা।