২০২৬ এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচন : শফিকুল
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন যে, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী আগামী সাধারণ নির্বাচন ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এই তথ্য আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এতে দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিল, তা দূর হয়েছে। এই রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০২৬ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ও সময় নির্ধারণ করার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর নির্ভরশীল।’
তিনি আরও বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিকের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করবে। সরকার নির্বাচন কমিশনকে প্রয়োজনীয় সকল সহযোগিতা প্রদান করবে। জনগণের অংশগ্রহণমূলক একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর (শনিবার) জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে আয়োজন করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে, ২০২৫ সালের শেষ থেকে ২০২৬ সালের প্রথমার্ধের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত হতে পারে।’ এই বক্তব্যের মাধ্যমে দেশের ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে স্বস্তি এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আজকের প্রেস ব্রিফিংয়ে শফিকুল আলম আরও বলেন, যারা গণহত্যা এবং সহিংস কার্যক্রমে জড়িত, তাদের বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে যাদের হাত রক্তে রঞ্জিত হয়েছে, তাদের কোনো প্রকার ক্ষমা করা হবে না। রাজনৈতিক পরিচয় নির্বিশেষে সকল অপরাধীকে বিচারের আওতায় আনা হবে। এটি সরকারের একটি অঙ্গীকার এবং এর বাস্তবায়নে সরকার কোনো আপস করবে না।’
তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, যারা হত্যাকাণ্ড ও গুমের মতো ঘৃণ্য অপরাধে জড়িত, তাদের নাম এবং পরিচয় যাই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। শফিকুল বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব, এবং আমরা তা পালন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।’
এছাড়া, শফিকুল আলম দেশের জনগণকে ধৈর্য ধারণ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আমাদের সকলকে ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো গড়ে তুলবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, প্রধান উপদেষ্টার এই রোডম্যাপ দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমিত করতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি এটি সরকারের সুশাসনের প্রতিশ্রুতি পূরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আরও পড়ুন
শেখ হাসিনার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়