যুক্তরাষ্ট্র থেকে সম্প্রতি শতাধিক অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরানো হয়েছে। এবার একই কাজ করছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের চিহ্নিত করতে বিভিন্ন ভারতীয় রেস্তোরাঁ, কার ওয়াশের দোকান, নেল পার্লারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইউভেট কুপারের অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উত্তর ইংল্যান্ডের হামবারসাইড এলাকার একটি ভারতীয় রেস্তোরাঁ থেকেই সাত অবৈধ অভিবাসীকে ধরা হয়েছে। জানুয়ারি মাসজুড়ে ৮২৮টি জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। চার্টার ফ্লাইটে করে অবৈধ অভিবাসীদের তাদের দেশে ফেরানো হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের তথ্য মতে, যাদের ফেরানো হয়েছে, তাদের মধ্যে মাদক অপরাধ, চুরি, ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত অপরাধীও রয়েছে।
এ বিষয়ে কুপার সম্প্রতি জানান, এই অবৈধ অভিবাসীদের বেআইনিভাবে কাজে নিয়োগ করে তাদের শোষণ করা হচ্ছিল। গত একমাসে ৬০৯ জন অবৈধ অভিবাসীকে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এছাড়াও বৈধ পরিচয়পত্রহীন শ্রমিকদের নিয়োগ করার জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে ১০৯০টি নোটিস পাঠিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। এসব ক্ষেত্রে নিয়োগদাতা দোষী সাব্যস্ত হলে প্রতি অবৈধ অভিবাসী শ্রমিকের জন্য ৬০ হাজার পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানার মুখোমুখি হতে পারেন তারা।
কার্যত ট্রাম্পের পথেই অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে কড়া পদক্ষেপের পথে হেঁটেছে ব্রিটিশ সরকার। হোম অফিসের এনফোর্সমেন্ট, কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের পরিচালক এডি মন্টগোমারি বলেন,
যারা মনে করে আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থা লঙ্ঘন করতে পারবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমার দল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই পরিসংখ্যান তারই প্রমাণ।
অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে এই অভিযান নিয়ে কুপার বলেন, তার বিভাগের ইমিগ্রেশন এনফোর্সমেন্ট টিম এই বছরের জানুয়ারিতে আগের বছরের তুলনায় ৪৮ শতাংশ বেশি অভিযান চালিয়েছে। আগের বছরের তুলনায় গ্রেফতার হয়েছে ৭৩ শতাংশ বেশি।
ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অভিবাসন আইন অবশ্যই মানতে হবে এবং প্রয়োগ করতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে, নিয়োগকর্তারা অবৈধ অভিবাসীদের শোষণ করে এসেছেন। অনেকেই অবৈধভাবে এখানে কাজ করতে পেরেছেন। এর জেরে মানুষের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ইংলিশ চ্যানেল পার করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জানা গেছে, অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে এই সপ্তাহে ব্রিটিশ সরকার সীমান্ত নিরাপত্তা, আশ্রয় ও অভিবাসন বিল উত্থাপন করবে। নতুন এই আইনে, কোনো অবৈধ অভিবাসীকে ব্রিটেনে আসতেই তাদের গ্রেফতার করার আগে তার ফোন বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা দেয়া হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। এছাড়া গ্রেফতারির পর অন্তত ২৮ দিনের মধ্যে তারা জামিনের জন্য আবেদনও করতে পারবেন না।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস