ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। এতে রয়েছে মানুষের সব বিষয়ের সুষ্ঠু সমাধান। খতনা বা মুসলমানি বলা হয় পুরুষাঙ্গের সামনের বা মাথার দিকে যে অতিরিক্ত চামড়া থাকে; তা কেটে বাদ দেয়া। মেডিক্যাল টার্মে একে বলে সারকামসিশন। সারকামসিশন শব্দটি এসেছে লাতিন সারকামডায়ার থেকে, যার অর্থ হলো চারদিক থেকে কেটে ফেলা।
খতনা নবীজির গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। নবী-রসুলরাও খতনা করেছেন। সাইদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, হজরত ইবরাহিম (আ.) হলেন খতনার সুন্নত পালনকারী প্রথম ব্যক্তি। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা ২৬৪৬৭)
খতনা ইসলামের শিয়ার বা মৌলিক নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত (তথা নবীগণের সুন্নত) পাঁচটি- খৎনা করা, নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করা, বগলের পশম উঠানো, মোঁচ ছোট করা এবং নখ কাটা। (বুখারি ৬২৯৭)
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,
স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম (আ.)-কে তার রব কয়েকটি বাণী দিয়ে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তিনি তা পূর্ণ করেন। তিনি বলেন, আমি তোমাকে মানুষের জন্য নেতা বানাব। সে বলল, আমার বংশধরদের থেকেও? তিনি বলেন, জালিমরা আমার ওয়াদাপ্রাপ্ত হয় না। (সুরা বাকারা ১২৪)
পশ্চিমা দেশে সাধারণত জন্মের পরপরই এটি করা হয়ে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে সাধারণত দেখা যায় যে, বাচ্চারা একটু বড় হলে তারপর তাদের খৎনা করা হয়ে থাকে। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর কোনো নির্দিষ্ট বয়স না থাকলেও, বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় তিন বা চার বছর বয়স খতনার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
বেশি ছোট শিশুরা ভয় পায় ও কান্নাকাটি করে বেশি। আর বড়দের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার-পরবর্তী ইরেকশনের কারণে রক্তপাত হওয়ার শঙ্কা বেড়ে যায়। তবে শিশুর খতনা করানোর আগে বাড়ি থেকে তাকে সাহস দিন। তাকে না বলে, গোপন করে বা জোর করে খতনা করাতে গেলে সার্জারির সময় আঘাতজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মুসলমানির জন্য সঠিক সময় হলো তিন থেকে চার বছরের মধ্যে। যখন সে ডায়াপার ছেড়ে দেবে। তখনই করিয়ে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো।