শীতের শেষে ঋতু পরিবর্তনের সময় অনেকেই ভোগেন বিরক্তিকর খুসখুসে কাশিতে। তবে চিকিৎসকদের মতে, কাশি নিজে কোনো রোগ নয়—বরং এটি কোনো অন্তর্নিহিত অসুস্থতার লক্ষণমাত্র। শারীরিক, মানসিক বা পরিবেশগত নানা কারণে কাশি দেখা দিতে পারে। এমনকি বয়ঃসন্ধির মতো স্বাভাবিক শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তনেও কাশি হতে পারে।
🔍 কাশি কতদিন স্থায়ী হলে কী বলা হয়?
চিকিৎসা বিজ্ঞানে কাশিকে স্থায়িত্ব অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা হয়:
-
অ্যাকিউট কাশি: ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী
-
সাব-অ্যাকিউট কাশি: ৩ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত
-
ক্রনিক কাশি: ৮ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী
🧠 কাশির প্রধান ৪টি কারণ
চিকিৎসকরা কাশির মূল কারণগুলো চারটি ভাগে ব্যাখ্যা করেন:
-
প্রদাহজনিত (Inflammatory)
শ্বাসনালী বা ফুসফুসে প্রদাহ হলে কাশি হয়। ল্যারেনজাইটিস বা ফ্যারেনজাইটিস এ ধরনের কাশির জন্য দায়ী। -
যান্ত্রিক চাপজনিত (Mechanical)
টিউমার বা হৃদরোগজনিত চাপে শ্বাসনালিতে চাপ সৃষ্টি হলে কাশি হতে পারে। -
রাসায়নিক (Chemical)
ধোঁয়া, সিগারেট, বা বিষাক্ত গ্যাস শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করলেই হতে পারে কাশি। -
তাপমাত্রাজনিত (Thermal)
হঠাৎ গরম-ঠান্ডা পরিবেশে যাতায়াত করলে কিংবা ঋতু পরিবর্তনের সময় এই ধরনের কাশি হয়।
🧪 কাশির ধরন ও বিশ্লেষণ
চরিত্র অনুযায়ী কাশি দুই প্রকার:
-
শুকনো কাশি (Dry Cough)
সাধারণত টিবির শুরুর দিকে, ল্যারেনজাইটিস, ফ্যারেনজাইটিস বা ট্রাকিয়াটাইটিসে দেখা যায়। এই কাশি খুব বিরক্তিকর এবং রাতে তীব্র হয়। -
কফযুক্ত কাশি (Productive Cough)
কফের রঙ ও ঘনত্ব দেখে চিকিৎসকেরা রোগ শনাক্ত করেন:-
পুঁজের মতো কফ: ফুসফুসে ফোঁড়ার ইঙ্গিত
-
হলদে কফ: সংক্রমণ
-
ধূসর বা কালচে কফ: ধুলাবালু বা দূষণের প্রভাবে কাশি
-
লালচে বা কালো কফ: নিউমোনিয়া
-
গোলাপি কফ: ফুসফুসে পানি জমা
-
শরীরের ভঙ্গিমায় কাশির তারতম্য: ব্রঙ্কাইটিস বা ফুসফুসের সমস্যা
-