গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে মরক্কোয়। গাজার জনগণের ওপর ইসরাইলের চলমান হামলা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের প্রতিবাদে দেশটির রাস্তায় বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ। রোববার (৬ এপ্রিল) মরক্কোর রাজধানী রাবাতে এই বিক্ষোভ হয়।
এটি ছিল কয়েক মাসের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভের একটি। রোববার রাবাতের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেন প্রতিবাদকারীরা। এ সময় ইসরাইলি পতাকা পদদলিত করেন বিক্ষোভকারীরা।
নিহত হামাস নেতাদের ব্যানার ওড়াতেও দেখা যায়। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ছবি সংযুক্ত করে পোস্টার ওড়ান তারা।
গত মাসে গাজায় তীব্র বিমান ও স্থল হামলা চালানোর মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ভেঙে দেয় ইসরাইল। গাজায় নতুন করে চালানো অভিযানে ১,০০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত এবং লক্ষ লক্ষ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
অন্যদিকে, গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫০,৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং ১,১৫,৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।
গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে হওয়া মরক্কোর বিক্ষোভ মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। একই দাবিতে তিউনিসিয়া, ইয়েমেন এবং মরক্কোর অর্থনৈতিক কেন্দ্র কাসাব্লাঙ্কায় ফিলিস্তিনপন্থি সমাবেশ হয়।
কয়েকমাস আগে গাজার পুনর্গঠনের জন্য ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক স্থানান্তরের প্রস্তাব দেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবের তীব্র সমালোচনা হয় বিশ্বজুড়ে। আরব দেশগুলো এই পরিকল্পনার নিন্দা জানায় এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো এটিকে জাতিগত ‘নির্মূল’ বলে অভিহিত করে।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনকারীদের উপর মার্কিন দমন-পীড়নেরও নিন্দা জানান মরক্কোর বিক্ষোভকারীরা।
অনেক বিক্ষোভকারী ট্রাম্পের এই অবস্থানকে তার পূর্বসূরি, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অধীনের নীতির ধারাবাহিকতা হিসেবে দেখেন।
বিক্ষোভকারী মোহাম্মদ তৌসি বলেন, ‘ট্রাম্প এই যুদ্ধকে শুধু আরও খারাপ অবস্থায় নিয়ে গেছেন।’ এক বার্তা সংস্থাকে এ কথা বলেন তৌসি। যিনি তার পরিবারের সাথে ক্যাসাব্লাংকা থেকে বিক্ষোভে যোগ দিতে এসেছিলেন।
‘বাইডেন কিছু জিনিস লুকিয়েছিলেন, কিন্তু ট্রাম্প সব দেখিয়ে দিয়েছেন। তারা ভিন্ন ভিন্নভাবে একই পলিসি তুলে ধরেছেন। সেসবের সারবস্তু ভিন্ন নয়।’ বলেন তিনি।
এদিকে, মরক্কোর সাবেক রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা আবদেলহাক এল আরাবি বলেন, ‘যুদ্ধ যত দীর্ঘ হচ্ছে, জনসাধারণের ক্ষোভ ততই বাড়ছে।’
অন্যদিকে, তামেসনার ৬২ বছর বয়সী বাসিন্দা বলেন, ‘এটি কোনো যুদ্ধ নয় – গাজাকে মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে।’
২০২০ সালে ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে মরক্কো। মরক্কোর এই সিদ্ধান্তে অনেক বিক্ষোভকারী এখনও ক্ষুব্ধ বলে জানান। এই পদক্ষেপটি সেই সময়ে চরম বিতর্কের জন্ম দিয়েছিল।
সূত্র: আল জাজিরা