চালের বাজারে দীর্ঘদিন ধরেই অস্থিরতা চলছে। এবার সেই অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ী ও বাজার বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, সরকারের বেশি দামে ধান কেনার কারণে চালের দাম কিছুটা বাড়বে।
এর আগেই বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছিলেন, বোরো ধান বাজারে এলে চালের দাম কমবে। কিন্তু ঠিক উল্টো কথা বললেন খাদ্য উপদেষ্টা। তিনি জানান, কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দিতে এবার ধান কেজি প্রতি চার টাকা বেশি দামে কিনছে সরকার। এতে কৃষক উপকৃত হলেও বাজারে চালের দাম বাড়বে।
এই দুই ধরনের মন্তব্যে সাধারণ মানুষ আরও বিভ্রান্ত। কেউ বলছেন চালের দাম কমবে, কেউ বলছেন বাড়বে।
এক ভোক্তা আদিব হোসেন বলেন, “কেউ বলছে দাম কমবে, কেউ বলছে বাড়বে। আমরা বুঝতে পারছি না কী হচ্ছে।”
বর্তমানে বাজারে মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৮৬-৯০ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৮ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা এবং পোলাও চাল ১১৬-১১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভোক্তারা বলছেন, চালের এই বাড়তি দামে তারা বিপাকে পড়ছেন। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারের কর্মকর্তাদের মন্তব্য ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দিচ্ছে দাম বাড়ানোর।
নাসিম নামে এক ক্রেতা বলেন, “সরকার বলছে চালের দাম বাড়তে পারে—এতে ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এতে আমাদেরই কষ্ট হচ্ছে।”
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখনই চালের দাম বাড়ানোর কোনো কারণ নেই। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের এক চাল বিক্রেতা বলেন, “বোরো মৌসুমের ধান উঠছে, কিছুদিনের মধ্যে নতুন চাল বাজারে আসবে। তখন দাম কমতে পারে।”
তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, চালের বাজার ঠিক রাখতে হলে সরকারকে নিয়মিত তদারকি করতে হবে।
ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, “সরকারিভাবে দাম একটু বাড়ালেও ব্যবসায়ীরা তার চেয়েও বেশি বাড়ায়। তারা কখনো জবাবদিহি করে না, এটাই বড় সমস্যা।”
তিনি আরও বলেন, “বাজারে নজরদারি না বাড়ালে চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। মজুতদারদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে, নয়তো ভোক্তাদের কষ্ট আরও বাড়বে।”