Uk Bangla Live News | Stay updated with UK Bangla Live News

যুক্তরাজ্যে ঘর সংকটে মুনাফা: কে কামাচ্ছে কোটি কোটি পাউন্ড?

ডেস্ক সংবাদ

যুক্তরাজ্যে ঘর সংকটের ভয়াবহ বাস্তবতাকে পুঁজি করে প্রাইভেট বাড়ির মালিক ও হোটেল ব্যবসায়ীরা বিপুল মুনাফা করছেন—এমন তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানে।

গার্ডিয়ানের তদন্ত বলছে, ইংল্যান্ডের বিভিন্ন স্থানীয় কাউন্সিল বর্তমানে ঘরহীনদের জন্য অস্থায়ী আবাসনের পেছনে প্রচলিত বাজারদরের তুলনায় দ্বিগুণ পর্যন্ত ভাড়া গুনছে। এর ফলে একদিকে যেমন সরকারের ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে, অন্যদিকে গড়ে উঠেছে একটি অনিয়ন্ত্রিত ও লাভজনক আবাসন বাজার।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ইংল্যান্ডে এক লাখেরও বেশি পরিবার অস্থায়ী আবাসনে রয়েছে। এ সংখ্যা যুক্তরাজ্যের মতো উন্নত দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় £২ বিলিয়ন মূল্যের একটি বেসরকারি অস্থায়ী আবাসন খাত গড়ে উঠেছে, যার অনেকাংশই অনিরাপদ, অপরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যঝুঁকিপূর্ণ। অনেক বাড়িতে ইঁদুরের উপদ্রব, স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এবং প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধার অভাবও রয়েছে।

শেল্টার সংস্থার পরিচালক মেরি ম্যাক্রে এ পরিস্থিতিকে “সমাজের লজ্জা” বলে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, “পরিবারগুলো বছরের পর বছর এসব অমানবিক পরিবেশে বাস করতে বাধ্য হচ্ছে, হঠাৎ হঠাৎ স্থানান্তর করা হচ্ছে—এবং এই দুর্দশার সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ বিপুল অর্থ কামিয়ে নিচ্ছে। অথচ স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সামনে বিকল্প নেই।”

তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ইংল্যান্ডের স্থানীয় কাউন্সিলগুলো অস্থায়ী আবাসনের পেছনে ব্যয় করেছে প্রায় £২.১ বিলিয়ন, যা আগের বছরের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশ বেশি। শুধু লন্ডন শহরেই প্রতিদিন জরুরি আবাসনের জন্য ব্যয় হচ্ছে £৪ মিলিয়ন, যা কিছু কাউন্সিলের হাউজিং বাজেটের ৭৫% পর্যন্ত।

অস্থায়ী আবাসনে দীর্ঘদিন ধরে অবস্থানরত পরিবারগুলোর পরিস্থিতিও ভয়াবহ। কেউ কেউ টানা পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে এসব অস্থায়ী আবাসনে কাটাচ্ছেন। একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে অন্তত ৭৪ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে এই অস্থায়ী আবাসনে, যাদের ৫৮ জনের বয়স ছিল এক বছরের নিচে।

হেস্টিংস কাউন্সিল জানিয়েছে, তাদের মোট বাজেটের অর্ধেকের বেশি এখন চলে যাচ্ছে অস্থায়ী আবাসনের পেছনে। অন্যদিকে, ক্রলি কাউন্সিল হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, এই খাতে ব্যয়ের ক্রমবর্ধমান চাপ তাদের ভবিষ্যৎ আর্থিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।

জাতীয় পর্যায়েও বিষয়টি গুরুত্ব পাচ্ছে। হাউজিং, কমিউনিটি ও স্থানীয় সরকার সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি বর্তমান পরিস্থিতিকে আখ্যায়িত করেছে “চরম লজ্জাজনক” হিসেবে।

ন্যাশনাল হাউজিং ফেডারেশনের প্রধান নির্বাহী কেট হেন্ডারসন বলেন, “২০১০ সালে সরকার সামাজিক আবাসন খাতে বরাদ্দ ৬৩% কমিয়ে দিয়েছিল। এর ফলেই আজ আমরা প্রতিবছর অস্থায়ী আবাসনে অতিরিক্ত £১৩ বিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করছি।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, টেকসই সামাজিক আবাসন নির্মাণেই রয়েছে এই সংকট নিরসনের দীর্ঘমেয়াদি সমাধান। তারা বলছেন, যদি সরকার এখন বড় পরিসরে বিনিয়োগ করে সামাজিক বাসস্থান নির্মাণে মনোযোগ দেয়, তাহলে ভবিষ্যতে ট্যাক্সদাতাদের অর্থ সাশ্রয় হবে এবং লাখো পরিবারের মানবিক বাসস্থান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Print
Email

সর্বশেষ সংবাদ

WhatsApp Image 2025-07-02 at 5.15.40 PM
ছাত্রদল নেতা লিটনের মুক্তির দাবিতে জাফলংয়ে বিক্ষোভ মিছিল
ছাত্রদল নেতা লিটনের মুক্তির দাবিতে জাফলংয়ে বিক্ষোভ মিছিল
Screenshot_18
পাথর ক্রাশার মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়
পাথর ক্রাশার মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়
623bf73c81447780074434
শনিবার থেকে সিলেটের সড়কে গাড়ি চলবেনা: পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি
শনিবার থেকে সিলেটের সড়কে গাড়ি চলবেনা: পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি
391000
সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১
সিলেটে ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ১
391395
সিলেটে ‘ভালো আচরণ’ দেখিয়ে ৮ বন্দির কারামুক্তি
সিলেটে ‘ভালো আচরণ’ দেখিয়ে ৮ বন্দির কারামুক্তি
WhatsApp-Image-2025-07-01-at-21.03.05_4b7966ba-800x445
সরকারি ওয়েবসাইটের লোগোতে একটি ফুলস্টপে খরচ পড়েছে ৫ লাখ পাউন্ড
সরকারি ওয়েবসাইটের লোগোতে একটি ফুলস্টপে খরচ পড়েছে ৫ লাখ পাউন্ড

সম্পর্কিত খবর