যুক্তরাজ্যে সরকার-চালিত একটি ওয়েবসাইটে শরিয়াহ আইন প্রশাসকের একটি চাকরির বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হওয়ায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। £২৩,৫০০ বার্ষিক বেতনের এই পদে ম্যানচেস্টারের একটি কমিউনিটি সেন্টার শরিয়াহ আইন জানা একজন আইনি সহকারী নিয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে, যিনি মুসলিম সম্প্রদায়কে সহায়তা করবেন এবং স্থানীয় শরিয়াহ কাউন্সিলের প্রশাসনিক কাজ দেখবেন।
রিফর্ম ইউকে দলের নেতা নাইজেল ফারাজ বিজ্ঞাপনটির সমালোচনায় সরব হয়ে এক্স (পূর্বে টুইটার)-এ লেখেন, “আমাদের জাতি ও মূল্যবোধ ধ্বংসের মুখে।” রাজনৈতিক বিশ্লেষক বেলা ওয়ালারস্টেইনারও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শরিয়াহ আইনের যুক্তরাজ্যে কোনো স্থান নেই এবং একে নিষিদ্ধ করা উচিত।
ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিলের সদস্য লাইলা কানিংহ্যামও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “করদাতাদের অর্থে যদি এই চাকরির ব্যয় বহন করা হয়, তাহলে সেটা স্পষ্টতই আমাদের জাতীয় নীতির পরিপন্থী।” তবে অন্যপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, এই চাকরিটি সরাসরি সরকার-অর্থায়িত নয়, বরং এটি শুধু ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস (DWP) পরিচালিত একটি প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপিত হয়েছে। শরিয়াহ কাউন্সিল একটি স্বাধীন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্রিটিশ আইন মেনেই পরিচালিত হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যে শরিয়াহ আইন প্রয়োগ ও এর ভূমিকা নিয়ে বহুদিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। দ্য টেলিগ্রাফ-এর তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশজুড়ে প্রায় ৮৫টি শরিয়াহ কাউন্সিল সক্রিয় ছিল, যেখানে মুসলিম নাগরিকেরা পারিবারিক ও বিবাহ সংক্রান্ত বিষয় মীমাংসার জন্য পরামর্শ নেন। এসব কাউন্সিলের কোনো আইনগত ক্ষমতা নেই এবং তারা কেবল ধর্মীয় সিদ্ধান্ত প্রদান করতে পারে—রাষ্ট্রীয় আদালতের আদেশ অগ্রাহ্য করার সুযোগ নেই।
এদিকে, কনজারভেটিভ এমপি নিক টিমোথি শরিয়াহ বিবাহের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বলেন, “যে কোনো শরিয়াহ বিবাহ যদি নাগরিক আইনি স্বীকৃতি ছাড়া সম্পন্ন হয়, তা হলে সেটিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা উচিত।”
সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস