একজন মুমিনের জীবনের মূল উদ্দেশ্য—আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন। আর এই সন্তুষ্টি অর্জনের পথে দিনের সূচনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম আমাদের শিখিয়েছে, প্রতিটি সকাল যেন হয় ইবাদতে ভরা, দোয়ায় শুরু করা দিনটি বান্দার জন্য হতে পারে রহমত ও বরকতের দিন।
নবী মুহাম্মদ ﷺ আমাদের এমন কিছু সহজ, অথচ অত্যন্ত মূল্যবান আমল শিক্ষা দিয়েছেন, যেগুলো নিয়মিত পালন করলে আত্মিক প্রশান্তি লাভের পাশাপাশি আল্লাহর কাছে প্রিয় হওয়া যায়।
✅ ১. সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি – ১০০ বার
হাদিস: “যে ব্যক্তি সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি পাঠ করে, কিয়ামতের দিন কেউ তার চেয়ে উত্তম আমল নিয়ে আসতে পারবে না, যদি না কেউ তার চেয়ে বেশি করে।” (মুসলিম: ২৬৯২)
উচ্চারণ: সুবহা-নাল্লা-হি ওয়া বিহামদিহি
অর্থ: আমি আল্লাহর প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি।
✅ ২. সন্ধ্যার বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার দোয়া (সকালেও পড়া যায়)
أَعُوذُ بِكَلِمَاتِ اللهِ التَّامَّاتِ مِنْ شَرِّ مَا خَلَقَ
উচ্চারণ: আউজু বিকালিমা-তিল্লাহিত তাম্মাতি মিন শাররি মা খালাক্বা
অর্থ: আমি আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমাগুলোর মাধ্যমে তার সৃষ্টি থেকে আশ্রয় চাই।
✅ ৩. আয়াতুল কুরসি – ফরজ নামাজের পর
ফজিলত: “যে ব্যক্তি প্রতিটি ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাতে প্রবেশে মৃত্যুই হবে একমাত্র বাধা।” (শু‘আবুল ঈমান: ২৩৯৫)
✅ ৪. সন্তুষ্টির ঘোষণা
رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا …
উচ্চারণ: রাদ্বিতু বিল্লাহি রব্বান, ওয়াবিল ইসলা-মি দীনান, ওয়াবি মুহাম্মাদিন ﷺ নাবিয়্যান
অর্থ: আমি আল্লাহকে রব, ইসলামকে জীবনব্যবস্থা এবং মুহাম্মদ ﷺ-কে নবী হিসেবে গ্রহণ করে সন্তুষ্ট।
✅ ৫. সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার – জান্নাতের নিশ্চয়তা
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي …
(সম্পূর্ণ দোয়াটি আগের লেখায় দেয়া আছে)
ফজিলত: সকালের এই ইস্তিগফার পাঠ করে কেউ মারা গেলে সে জান্নাতে যাবে। (বুখারি: ৬৩০৬)
✅ ৬. হেফাজতের দোয়া – অনিষ্ট থেকে নিরাপত্তা
بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ …
উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাযি লা ইয়াদুররু মা’আ ইসমিহি শাইউন …
অর্থ: আল্লাহর নামে, যাঁর নামের বরকতে কোনো কিছুই ক্ষতি করতে পারে না।
✅ ৭. দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া
حَسْبِيَ اللَّهُ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ …
সকালে ও সন্ধ্যায় ৭ বার পাঠ করলে আল্লাহ সব দুশ্চিন্তা দূর করে দেন। (আবু দাউদ: ৫০৮১)
✅ ৮. জাহান্নাম থেকে মুক্তির দোয়া
اللَّهُمَّ أَجِرْنِي مِنَ النَّارِ
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন।
সকাল ও মাগরিবের পর ৭ বার পড়লে এ দোয়াটি জান্নাতের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। (আবু দাউদ: ৫০৭৯)