সিলেটে মন্দির ঢেকে দেওয়ার ভুয়া খবর: ভারতীয় গণমাধ্যমের বিভ্রান্তি
সিলেটের এমসি কলেজ মাঠে ১১ জানুয়ারি তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত তাফসিরুল কুরআন মাহফিলের শেষ দিনে ইসলামিক স্কলার ড. মিজানুর রহমান আজহারীর বয়ান ঘিরে একটি বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। ভারতীয় গণমাধ্যম নিউজ১৮ বাংলা দাবি করে, মাহফিলের জন্য পার্শ্ববর্তী একটি মন্দির কাপড়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। এই তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রচারিত হয়। তবে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানারের মতে, এই দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
প্রকৃত ঘটনা কী?
তথ্য অনুসারে, সিলেটের গোপাল টিলা সার্বজনীন পূজা মণ্ডপের মন্দিরটি শীতকালের কুয়াশা থেকে প্রতিমাগুলো রক্ষার জন্য কাপড়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। সেখানে সরস্বতী পূজার জন্য প্রতিমা তৈরি চলছিল। মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি কর পুরকায়স্থ বিষয়টি স্পষ্ট করে জানান, মাহফিলের সঙ্গে মন্দির ঢাকার কোনো সম্পর্ক নেই। মন্দিরে প্রতিমা তৈরি কাজে নিয়োজিত কারিগর নিজ উদ্যোগে প্লাস্টিক এবং কাপড় ব্যবহার করেছেন, যা মন্দিরের নিরাপত্তা এবং কুয়াশা থেকে প্রতিমা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ছিল।
মিথ্যা তথ্য প্রচারের প্রভাব
ভারতীয় গণমাধ্যমের বিভ্রান্তিকর এই সংবাদ জনমনে ভুল ধারণার সৃষ্টি করে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী এবং মন্দির কমিটির সদস্যরা নিশ্চিত করেছেন, ওয়াজ মাহফিলের আগে থেকেই মন্দিরে কাপড় টানানো ছিল, যা এখনো রয়েছে।
মন্দির কমিটির বক্তব্য
হিমাদ্রি কর পুরকায়স্থ জানান, স্থানীয় একজন কারিগর সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করে আশেপাশের পূজা মণ্ডপগুলোতে সরবরাহ করেন। শীতকালীন পরিবেশে প্রতিমা সুরক্ষিত রাখতে এবং শিশু-কিশোরদের অযাচিত কৌতূহল এড়াতে তিনি মন্দিরটি কাপড়ে ঢেকে রেখেছেন।
উপসংহার
রিউমর স্ক্যানারের বিশ্লেষণ অনুসারে, গোপাল টিলা মন্দির ঢাকার ঘটনাটি শুধুমাত্র প্রতিমা তৈরির কাজের জন্য এবং এর সঙ্গে সিলেটের এমসি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত মাহফিলের কোনো সম্পর্ক নেই। ভারতীয় গণমাধ্যমের এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা তৈরি করতে পারে। তাই যাচাই ছাড়া এ ধরনের সংবাদের ওপর নির্ভর না করার আহ্বান জানানো হয়েছে।