গত ১৭ জানুয়ারি সিলেটের আখালিয়া এলাকার খুলিয়াপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব, হাফেজ মাওলানা ফাহিম আহমেদ জুমার নামাজের পূর্বে তার বয়ানে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি বলেন, “অনেক মসজিদের কমিটিতে এমন মানুষ আছে যারা সুদ-ঘুষের সাথে জড়িত,” তবে তিনি বিশেষ কোনো মসজিদ বা কমিটির নাম উল্লেখ করেননি। তার এই বক্তব্যের পর, মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ মোবাশ্বির আলী এবং অন্যান্য সদস্যরা অসন্তুষ্ট হন।
মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ইমাম ফাহিম আহমেদ তার দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। বিশেষ করে, তিনি মসজিদের কমিটির সদস্যদের নিয়ে কটুক্তি করেছিলেন, যার ফলে মুসল্লীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। কোষাধ্যক্ষ মোবাশ্বির আলী বলেন, “ইমাম সাহেব মসজিদে ঘুমিয়ে থাকতেন, সময়মতো আসতেন না এবং কমিটি নিয়ে নানা অশোভনীয় মন্তব্য করতেন।”
এই ঘটনার পর ১৮ জানুয়ারি ইমামকে জোরপূর্বক ১০ দিনের ছুটিতে পাঠানো হয়। তারপর ২৯ জানুয়ারি, ছুটি শেষে মসজিদে ফিরে ইমাম জানতে পারেন, তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এই পদক্ষেপটি ইমামের গাফিলতির কারণে নেওয়া হয়েছে, সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করার কারণে নয়।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইমাম ফাহিম আহমেদ থানায় সাধারণ ডায়েরি (GD) করেছেন এবং তার সংগঠন, “শানে সাহাবা জাতীয় খতিব ফাউন্ডেশন” এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠনের সহসভাপতি মাওলানা মাসুম আহমেদ বলেছেন, “এটি একটি অপমানজনক ঘটনা। সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে বয়ান করা এক ইমামের নৈতিক দায়িত্ব ছিল, কিন্তু তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।”
ইমাম ফাহিম আহমেদ তার বক্তব্যে বলেন, তিনি কখনও খুলিয়াপাড়া জামে মসজিদ বা অন্য কোনো মসজিদের কমিটিকে ইঙ্গিত করেননি, তবে সুদ-ঘুষের বিরুদ্ধে সতর্ক করতে গিয়ে কমিটির কিছু সদস্যের বিরাগভাজন হন।