যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তর ঘোষণা করেছে, যারা সরকার নির্ধারিত নতুন আবাসনে যেতে অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের হোটেল সুবিধা ও আর্থিক সহায়তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এসেক্সের বেল হোটেলে সংঘর্ষ ও বিতর্কিত ঘটনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বেল হোটেলে আশ্রয়প্রার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যার জেরে নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এক আশ্রয়প্রার্থী ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। ৩৮ বছর বয়সী হাদুশ গারবারস্লাসি কেবাতুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলেও, তিনি আদালতে তা অস্বীকার করেছেন। মামলাটি আগামী মাসে শুরু হবে।
এই ঘটনার পর দেশজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়। উগ্র-ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলো বিক্ষোভে নামে, যা আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতা রুখতে মোতায়েন করা হয় বিপুলসংখ্যক পুলিশ।
স্বরাষ্ট্র দপ্তরের মতে, “ফেইলিওর টু ট্রাভেল” নীতিমালার আওতায়, কোনো বৈধ কারণ ছাড়া যেসব একক পুরুষ আশ্রয়প্রার্থী স্থানান্তরে অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের হোটেল ও আর্থিক সুবিধা বন্ধ করা হবে।
তবে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, এই নীতি নতুন নয় এবং প্রায়শই প্রশাসনিক জটিলতা বা তথ্যের অভাবে আশ্রয়প্রার্থীরা স্থানান্তর নিয়ে বিভ্রান্ত হন।
এসব ঘটনার পর আগামী রবিবার বেল হোটেলের সামনে আবারও বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো পাল্টা বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সাবেক লেবার নেতা জেরেমি করবিন ও এমপি ডায়ান অ্যাবট আশ্রয়প্রার্থীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। করবিন বলেন, “শরণার্থীদের মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা উচিত। জাতিগত বিদ্বেষ নয়, সমস্যা হচ্ছে অর্থনৈতিক বৈষম্য।”
এপিং ফরেস্ট জেলা পরিষদ প্রতীকীভাবে একটি প্রস্তাব পাস করেছে যাতে বেল হোটেল দ্রুত বন্ধ এবং ফিনিক্স হোটেল ধাপে ধাপে বন্ধের আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়া ক্যানারি ওয়ার্ফ-এও বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে ব্রিটানিয়া ইন্টারন্যাশনাল হোটেলে আশ্রয়প্রার্থীদের স্থানান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে ‘স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম’ এবং ডানপন্থী গোষ্ঠীগুলোর পাল্টা অবস্থানের ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে ছিল।
নটিংহ্যামশায়ারের সাটন-ইন-অ্যাশফিল্ড এলাকাতেও শতাধিক বিক্ষোভকারী জড়ো হন। স্থানীয় এমপি লি অ্যান্ডারসন-এর বক্তব্য পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তোলে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান