লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার সিটি কাউন্সিলে ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ে এক মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি মূল্যের প্রতারণা শনাক্ত হয়েছে। এসব প্রতারণার মধ্যে ছিল ভাড়ার বাসা নিয়ে জালিয়াতি, পার্কিং কার্ড (ব্লু ব্যাজ) অপব্যবহার, এবং কাউন্সিল কর্মীদের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও কাজ করা।
এই সময়কালে কাউন্সিলের প্রতারণা তদন্ত বিভাগ মোট ৪৬৮টি কেস পর্যালোচনা করেছে। এর মধ্যে ৪১৬টি ছিল নতুন কেস এবং ৩৩১টি কেসের নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অর্থ হচ্ছে—কোনো প্রতারককে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, প্রতারণা বন্ধ করা গেছে, অথবা প্রমাণের অভাবে কোনো অপরাধ ধরা পড়েনি।
একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনায়, কাউন্সিলের একজন কর্মী চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরেও অনেকদিন ধরে বেতন পেয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি কাউকে কিছু জানাননি। বাজেট পর্যালোচনার সময় এই ভুল ধরা পড়ে। পরে জানা যায়, সিস্টেমে তার নাম ঠিকমতো হালনাগাদ হয়নি এবং কোনো তদারকি ছিল না। বর্তমানে এই অতিরিক্ত অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া চলছে।
অন্য একটি ঘটনায়, পেস্ট কন্ট্রোল বিভাগের এক কর্মী কাউন্সিলের পোশাক ও গাড়ি ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে কাজ করছিলেন। এমনকি তিনি নিজের ফেসবুক পেজে তার ব্যক্তিগত ব্যবসার বিজ্ঞাপনও দিয়েছিলেন। তার রেফারেন্সও পরে ভুয়া প্রমাণিত হয়। এর জেরে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় এবং তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
বাড়িভিত্তিক প্রতারণাও ছিল উল্লেখযোগ্য। কাউন্সিল ৩৪টি বাসা পুনরুদ্ধার করেছে, যেগুলো অবৈধভাবে সাবলেট দেওয়া হয়েছিল, ফাঁকা ফেলে রাখা হয়েছিল বা উত্তরাধিকারের নামে জালিয়াতি করা হয়েছিল। এসব বাসার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৬ লাখ ৬৭ হাজার পাউন্ড।
আরেকটি ঘটনায়, সোহো এলাকায় একটি কাউন্সিল ফ্ল্যাট Airbnb-তে ভাড়া দেওয়া হচ্ছিল, অথচ মূল ভাড়াটে তখন ফ্রান্সে অবস্থান করছিলেন। ওই ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ১২ হাজার পাউন্ড আয় হয়েছিল। তদন্তে জানা যায়, তৃতীয় একজন ব্যক্তি বেআইনিভাবে এই ভাড়া চালাচ্ছিল। আদালত পরে মূল ভাড়াটেকে জরিমানা করে এবং ফ্ল্যাটটি ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়।
ওয়েস্টমিনস্টার কাউন্সিল জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এমন প্রতারণা ঠেকাতে আরও কঠোর নজরদারি চালানো হবে এবং নিয়মিত রেকর্ড পর্যালোচনা করা হবে।