জিলহজ মাস ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। হজ, কুরবানি, তাকওয়া ও আত্মত্যাগের মাস হিসেবে এর বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। বিশেষ করে জিলহজের প্রথম ১০ দিন অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এই দিনগুলোতে বেশি বেশি নেক আমল করা মুস্তাহাব। নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু আমল তুলে ধরা হলো:
🕋 ১. এই দশ দিনের মর্যাদা
আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেন:
“শপথ ফজরের এবং দশ রাতের।”
(সুরা ফাজর: ১-২)
মুফাসসিরগণ বলেন, এখানে “দশ রাত” বলতে জিলহজের প্রথম দশ রাত বোঝানো হয়েছে।
🕌 ২. নেক আমলের ফজিলত
রাসুল (সা.) বলেন:
“আল্লাহর কাছে কোনো দিন এমন প্রিয় নয়, যেদিনে নেক আমল করা এই দশ দিনের চেয়ে প্রিয়।”
(সহিহ বুখারি: ৯৬৯)
📣 ৩. তাকবির, তাহলিল ও তাহমিদ পাঠ
রাসুল (সা.) বলেন:
“তোমরা এই দশ দিনে বেশি করে ‘আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আলহামদু লিল্লাহ’ পড়ো।”
(মুসনাদে আহমদ: ৫৪৪৬)
তাশরিকের তাকবির (৯-১৩ জিলহজ, আসরের নামাজ পর্যন্ত):
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হাম্দ”
🌙 ৪. রোজা রাখা (বিশেষভাবে ৯ জিলহজ)
“আরাফার দিনের রোজা পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এক বছর গুনাহ মোচনের কারণ হয়।”
(সহিহ মুসলিম: ১১৬২)
🐑 ৫. কুরবানি করা (১০-১২ জিলহজ)
“মানুষের কোনো আমল আল্লাহর কাছে কুরবানির দিনের রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে বেশি প্রিয় নয়।”
(তিরমিজি: ১৪৯৩)
✂️ ৬. কুরবানির নিয়তে চুল-নখ না কাটা
“যে ব্যক্তি কুরবানির ইচ্ছা করে, সে যেন জিলহজের চাঁদ দেখার পর থেকে কুরবানির দিন পর্যন্ত চুল ও নখ না কাটে।”
(সহিহ মুসলিম: ১৯৭৭)
🕋 ৭. অন্যান্য নেক আমল
-
নফল নামাজ
-
কুরআন তিলাওয়াত
-
জিকির-আসকার
-
ইস্তিগফার
-
দান-সদকা
-
সালাতুত তাসবিহ
জিলহজের প্রথম দশ দিন আল্লাহর বিশেষ নেয়ামত। এই সময় গাফেল না থেকে আমরা যেন বেশি করে ইবাদত, রোজা, কুরআন তিলাওয়াত, তাকবির ও কুরবানির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।