টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগে বিতর্ক: পার্লামেন্টে স্টারমারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রী (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের ঘটনা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। টিউলিপের পদত্যাগ ঘিরে প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সিদ্ধান্ত ও ভূমিকা নিয়ে বুধবার পার্লামেন্টে প্রশ্ন তোলেন বিরোধীদল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি বেইডনক।
টিউলিপ সিদ্দিক গতকাল (মঙ্গলবার) দুর্নীতির অভিযোগের মুখে পদত্যাগ করেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিটি মিনিস্টার হিসেবে তিনি আর্থিক খাতে দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে ছিলেন। পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার টিউলিপকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি গভীর দুঃখের সঙ্গে এই পদত্যাগ গ্রহণ করছেন।
আজ পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় নেতা কেমি বেইডনক টিউলিপের পদত্যাগ ও এর পেছনের বিতর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। তিনি বলেন, “বাজারের অস্থিরতার সময় সাবেক সিটি মিনিস্টারের পদত্যাগ ও এর সাথে যুক্ত সংকট সামলাতে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত দেশের জন্য কতটা উপযুক্ত ছিল?”
বেইডনক আরও বলেন, দুর্নীতি দমনের দায়িত্বে থাকা একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হওয়া এবং তার পদত্যাগ সরকারের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এ সময় বাংলাদেশের নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য তুলে ধরেন তিনি। ইউনূসের দাবি অনুযায়ী, লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের ফ্ল্যাট দুর্নীতির অর্থ দিয়ে কেনা হতে পারে। এ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে তদন্তের আহ্বান জানান বেইডনক।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বাধীন উপদেষ্টা লাউরি ম্যাগনাসের কাছে তুলে ধরেন এবং কোনো বিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে প্রধানমন্ত্রী স্বীকার করেন যে, টিউলিপ তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের সাথে সম্পর্কের কারণে কিছু সুনাম ক্ষুণ্ন হওয়ার ঝুঁকির ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন ছিলেন না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকায় একটি ফ্ল্যাট উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন। এই ফ্ল্যাটটি একটি অফশোর কোম্পানির মাধ্যমে কেনা হয় এবং কয়েক বছর তিনি সেখানে বসবাস করেন। বিষয়টি নিয়ে লাউরি ম্যাগনাস তদন্ত করলেও কোনো অনিয়মের প্রমাণ পাননি।
এই ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে টিউলিপের পদত্যাগ এবং তার চারপাশে ঘটা বিতর্ক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার বিষয়টিকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।