ঢাকা শহরের ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনটি গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ভাঙচুরের শিকার হয়। ছাত্র-জনতার প্রতিবাদী আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৬১ সালে এই বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যরা এই বাড়িতেই নিহত হন। বর্তমানে এই বাড়িটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের অধীনে পরিচালিত হয়।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্র-জনতা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাড়ির সামনে জড়ো হতে শুরু করে এবং পরে এক্সক্যাভেটর ও ক্রেন দিয়ে বাড়ির ভাঙচুর শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা দাবি করছেন, তারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই বাড়ি ভাঙছেন, যা শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের স্মৃতি হিসেবে থাকে। তারা শেখ মুজিবকে ‘ফ্যাসিবাদের পিতা’ হিসেবে চিহ্নিত করছেন এবং তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
তবে, ঘটনার পর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়নি। ছাত্ররা প্রায় পুরো বাড়িটি ভেঙে ফেলতে চেয়েছিল, এবং তারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিল। এমনকি এক পর্যায়ে, দুই জনকে মারধর করা হয় যারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিচ্ছিলেন।
বাড়ির ভাঙচুরের সময় আশপাশের গাছপালা এবং ভবনের কিছু অংশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্ররা শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানাচ্ছিলেন এবং এই আন্দোলনকে দেশের ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে এক বিপ্লব হিসেবে দেখতে চাচ্ছিলেন।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পরই এই প্রতিবাদী আন্দোলন শুরু হয় এবং ছাত্ররা শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভেঙে ফ্যাসিবাদের প্রতি তাদের প্রতিবাদ জানাতে চেয়েছিলেন। এই আন্দোলন এখনো চলমান এবং প্রতিবাদকারীরা কোনো অবস্থাতেই বাড়িটি সম্পূর্ণ ভাঙা না হওয়া পর্যন্ত ওই স্থান ছাড়বেন না বলে জানিয়েছেন।