যুক্তরাজ্যে খাদ্যপণ্যের দাম এপ্রিল মাসে গত ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ রিটেইল কনসোর্টিয়াম (BRC)। জরিপ অনুযায়ী, এপ্রিল মাসে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২.৬%, যা মার্চের ২.৪%-এর তুলনায় বেশি এবং ২০২৪ সালের মে মাসের পর এই প্রথম এত বড় মূল্যবৃদ্ধি দেখা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, খুচরা বিক্রেতাদের ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় আগামী মাসগুলোতে দোকানে বিক্রি হওয়া পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। অক্টোবরে নতুন প্যাকেজিং কর চালু হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলেও জানিয়েছে বিসিআরসি।
যদিও সামগ্রিকভাবে খুচরা বিক্রির দামে গত বছরের তুলনায় ০.১% হ্রাস পেয়েছে, যা মার্চ মাসে ছিল ০.৪%। তবে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ ভোক্তারা চাপে পড়ছেন।
নিলসেনআইকিউ-এর মাইক ওয়াটকিন্স বলেন, “ইস্টারের ছুটি বিক্রি বাড়াতে সহায়তা করেছে ঠিকই, কিন্তু সাধারণ মানুষ এখনো প্রয়োজনীয় নয় এমন খরচে অনেক বেশি সতর্ক হয়ে উঠেছেন।”
এদিকে, ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড সতর্ক করেছে, যদি দোকানগুলোর খরচ বাড়ে, তবে তা মূল্যস্ফীতির হার বাড়িয়ে দিতে পারে। মার্চ মাসে যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়ায় ২.৬%-এ, তবে বছরের শেষ নাগাদ এটি বেড়ে ৩.৭%-এ পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে ব্যাংকটি। এই হার তাদের নির্ধারিত ২% লক্ষ্যমাত্রার প্রায় দ্বিগুণ।
ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি এই পরিস্থিতিকে সাময়িক বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবণতা যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
এদিকে, বিসিআরসি আরও জানিয়েছে, সরকারের নতুন ‘এমপ্লয়মেন্ট রাইটস বিল’-এর কারণে খুচরা খাতে চাকরির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। এই বিলের অধীনে কর্মীদের ন্যূনতম কাজের সময় নিশ্চিত করা, চাকরিচ্যুতিতে কড়াকড়ি আরোপ এবং অসুস্থতার ভাতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বিসিআরসি-র প্রধান নির্বাহী হেলেন ডিকিনসন বলেন, “এমপ্লয়মেন্ট রাইটস বিলের বাস্তবায়ন যেন খরচ আরও বাড়িয়ে না তোলে এবং নিয়োগ হ্রাসের কারণ না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করা জরুরি।”
সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ভোক্তাদের জন্য সামনের দিনগুলোতে মূল্যস্ফীতি ও চাকরির বাজারের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠছে।