রমজান মাস মহান আল্লাহর অনন্য নেয়ামতে পরিপূর্ণ। বান্দা তা স্বচ্ছন্দে পালন করবে। তবে মানুষমাত্রই ভুল করতে পারে বা সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
রোজা রেখে কোনোরকম প্রয়োজন ছাড়া ভেঙে ফেললে এর জন্য কাজা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হয়। আর রোজার কাফফারা হলো প্রতিবিধান হিসেবে অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ আদায় করা। রোজা কাজা করার পরও কাফফারা আদায় করতে হয়। এই কাফফারা হলো
একটি দাস মুক্ত করা, আর অক্ষম হলে ধারাবাহিকভাবে ৬০ দিন রোজা রাখা এবং তা-ও না পারলে ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খাবার খাওয়ানো।
বেশিরভাগ ফকিহ বলেন, রোজার কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা আবশ্যক। অর্থাৎ রোজা ভঙ্গকারী দাস মুক্ত করতে অক্ষম হলে দুই মাস রোজা রাখবে। আর দুই মাস রোজা রাখতে ব্যর্থ হলে ৬০জন মিসকিনকে খাবার খাওয়াবে।
যে কয়টি রোজা রাখার পর ওজর ছাড়া ভাঙবে, প্রতিটির পরিবর্তে একটি করে কাজা এবং একই রমজান মাসের জন্য তার সঙ্গে যুক্ত হবে একটি কাফফারা। অর্থাৎ একটি রোজা যৌক্তিক কারণ ছাড়া ভাঙলে তার জন্য কাজা ও কাফফারা হবে ৬১ রোজা, দুটি ভাঙলে হবে ৬২ রোজা, তিনটি ভাঙলে হবে ৬৩ রোজা।
কাফফারার ৬০টি রোজা একত্রে ধারাবাহিকভাবে আদায় করতে হয়। কারও যদি কাজা, কাফফারাসহ মোট ৬১ বা তার বেশি হয়, তবে কমপক্ষে ৬১টি রোজা একটানা আদায় করতে হবে। কাফফারার রোজার মধ্যে বিরতি হলে বা ভাঙলে আরেকটি কাফফারা ওয়াজিব হয়ে যাবে।
অর্থাৎ ৬১টি রোজা পূর্ণ হওয়ার আগে বিরতি হলে পুনরায় নতুন করে এক থেকে শুরু করে ৬১ রোজা পূর্ণ করতে হবে। যে রোজাগুলো রাখা হলো তা নফল হিসেবে পরিগণিত হবে। কোনো গ্রহণযোগ্য ওজর বা আপদের কারণে ভাঙতে হলে তা ক্ষমার যোগ্য । নারীরা বিশেষ বিরতির সময় বাদ দিয়ে ধারাবাহিকভাবে আদায় করবে।
শিশু নাবালেগ অবস্থায় রোজা রাখা ফরজ নয়, তবু তারা নিজেদের আগ্রহে ও বড়দের উৎসাহে রোজা রেখে থাকে। এ অবস্থায় তারা যদি রোজা রেখে কখনো ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় রোজা ভেঙে ফেলে, তাহলে তাদের কাজা বা কাফফারা কোনোটিই প্রয়োজন হবে না।