যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে তৃতীয় রানওয়ে নির্মাণ পরিকল্পনা নিয়ে লেবার পার্টির মধ্যে তীব্র বিরোধ দেখা দিয়েছে। চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস এই মাসের শেষের দিকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা দিতে যাচ্ছেন, যার মধ্যে এই রানওয়ে সম্প্রসারণ অন্যতম।
তবে এই পদক্ষেপকে অনেকে ‘মরিয়া’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। রিভসের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে পার্টির ভেতর থেকেই কড়া সমালোচনা উঠে আসছে। বিশেষত, জ্বালানি সচিব এড মিলিব্যান্ড এবং লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এই সিদ্ধান্তের কঠোর বিরোধিতা করেছেন।
মিলিব্যান্ড যুক্তি দিচ্ছেন, পরিবেশগত সংকট মোকাবিলা এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য কার্বন নির্গমন লক্ষ্য পূরণের জন্য এই সম্প্রসারণ পরিকল্পনা পুরোপুরি বিরোধী। জলবায়ু পরিবর্তন কমিটির (সিসিসি) সুপারিশ অনুসারে, “কার্বন নির্গমন কমানোর প্রস্তাব ছাড়া বিমানবন্দর সম্প্রসারণ গ্রহণযোগ্য নয়।”
সবুজ প্রযুক্তির প্রতিশ্রুতি, তবে পরিবেশবিদদের শঙ্কা
রিভস বলেন, এই সম্প্রসারণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে টেকসই বিমান জ্বালানি (SAF) ব্যবহারের ম্যান্ডেট আনা হবে, যেখানে ২০২৫ সালের মধ্যে বিমানে ২% জ্বালানি পরিবেশবান্ধব হবে। তবে পরিবেশবিদরা এই প্রতিশ্রুতিকে ‘অপর্যাপ্ত’ এবং ‘অবাস্তব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
গ্রিনপিস ইউকের নীতি পরিচালক ডগ পার বলেন, “এই পরিকল্পনা পরিবেশ এবং অর্থনীতির ওপর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি করবে। এটি শুধুমাত্র একটি মরিয়া প্রচেষ্টা যা জিডিপি বাড়ানোর জন্য পরিবেশগত মূল্যে সমাধান খুঁজতে চায়।”
রাজনৈতিক চাপে রিভস
রানওয়ে সম্প্রসারণের পরিকল্পনাটি শুধুমাত্র পরিবেশবিদদের নয়, লেবার দলের বহু ব্যাকবেঞ্চারের বিরোধিতার মুখোমুখি। বিশেষত, যেসব নির্বাচনী এলাকা বিমানবন্দরের নিকটে অবস্থিত, সেখানকার বাসিন্দারা বায়ু দূষণ এবং শব্দ দূষণের সম্ভাব্য ক্ষতি নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এমপি ক্লাইভ লুইস বলেন, “এই সম্প্রসারণ ট্রেজারির স্বল্পমেয়াদী প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য পূরণ করতে পারে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে পরিবেশ এবং জনগণের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে।”
ভবিষ্যৎ কী নির্দেশ করছে?
হিথ্রোতে তৃতীয় রানওয়ে নির্মাণের এই পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের পরিবেশ, অর্থনীতি, এবং রাজনৈতিক অঙ্গনে এক বিরাট আলোচনার সূত্রপাত করেছে। রিভসের ঘোষণা কি লেবার পার্টির ভেতরে আরও বিভাজন সৃষ্টি করবে, নাকি এটি পরিবেশ এবং অর্থনীতির মধ্যে একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করবে, তা সময়ই বলে দেবে।