দুর্ঘটনা, যানজট ও যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে ঈদযাত্রার সময় সড়ক, রেল ও নৌপথে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহন বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের সময় প্রতিবছর ফিটনেসবিহীন, লক্কড়-ঝক্কড় বাস, ট্রাক, লেগুনা, টেম্পু, মাইক্রোবাস, নছিমন-করিমন এবং সিটি সার্ভিসের বাস-মিনিবাস যাত্রী পরিবহনের জন্য সড়ক পথে নেমে আসে। এর ফলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। নৌপথে মেয়াদ উত্তীর্ণ নৌযানও দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে। রেলপথে পুরনো কোচ এবং ইঞ্জিনের কারণে দুর্ঘটনা, লাইনচ্যুতি এবং যানজট সৃষ্টি হয়, যা প্রাণহানি ও ক্ষতির কারণ হয়।
বিগত ঈদুল ফিতরের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, গত ঈদে ৩৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪০৭ জন নিহত এবং ১৩৯৮ জন আহত হয়েছিল। ১৮টি রেল দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছিল। এছাড়া ২টি নৌপথ দুর্ঘটনায় ৭ জন নিহত এবং ৫ জন আহত হয়েছিল। এবারের ঈদে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, সারাদেশে প্রায় ৫ লাখ যানবাহনের ফিটনেস নেই। এসবের মধ্যে ৫ লাখ ইজিবাইক, ৬০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৭ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা, ১ লাখ নছিমন করিমন এবং ২০ লাখ মোটরসাইকেল জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল করছে। এসব যানবাহন দীর্ঘপথের বাসের গতি কমিয়ে দিয়ে যানজট সৃষ্টি করছে।
এসব যানবাহন জাতীয় মহাসড়ক থেকে দ্রুত সরানোর দাবি জানিয়ে মো. মোজাম্মেল হক বলেন, সড়ক-মহাসড়ককে বেদখলমুক্ত রাখতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা, পুলিশ ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ও ফিটনেসবিহীন নৌযান চলাচল বন্ধ করা এবং অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিটি রুটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বাস, লঞ্চ, রেলস্টেশনগুলোতে নিরাপদে বসার ব্যবস্থা, শৌচাগারের সুব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখতে হবে। যাত্রীদের পথে ছিনতাই, অজ্ঞানপাটি, টানা পার্টি বা অন্য কোনও দুষ্কৃতিকারীদের নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর কার্যক্রম আরও বৃদ্ধি করা উচিত।